টিকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে, জুলাই হতে আরও টিকা আসবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২১, ১৪:৪২ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দেশের সব নাগরিককে বিনা মূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। টিকা সংগ্রহে যত টাকাই প্রয়োজন হোক না কেন, সরকার তা দেবে। টিকা নিয়ে সমস্যা হবে না। জুলাই মাস থেকে আরও টিকা আসবে। ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরু হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনার টিকা নিয়ে যখন গবেষণা চলছিল তখন থেকেই বাংলাদেশ টিকার জন্য যোগাযোগ শুরু করেছিল। ভারতে হঠাৎ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে সমস্যায় পড়েছে। কিন্তু এখন টিকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সব কোম্পানির সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। তিনি আশা করেন, জুলাই মাস থেকে আরও ভ্যাকসিন আসবে। ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হবে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, টিকা কেনার জন্য বাজেটে ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে ইতিমধ্যে এক কোটি ১৪ লাখ ৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা হয়েছে। যাঁরা বিদেশ যাচ্ছেন তাঁদের আগে টিকা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে বিদেশে গিয়ে তাঁদের কোয়ারেন্টিন করতে না হয়।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে। টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন হলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। আর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের একটি সীমাবদ্ধতা আছে। স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সবাই যেন টিকা পায়, দ্রুত যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য খাতকে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর আমরা করোনার প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। সেই অভিজ্ঞতায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মহামারি মোকাবিলা করে জনস্বাস্থ্য ও জনজীবন সুরক্ষিত করতে আমরা সক্ষম হব।
করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থার কথা জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ এখনো বিদ্যমান থাকায় যেকোনো জরুরি চাহিদা মোকাবিলায় আমরা এই বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ রেখেছি। দ্রুততম সময় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য খাতে অভিঘাত থেকে মুক্তি পেতে সমন্বিত বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। বাজেটে এই খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ ও অভিঘাত মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব সত্ত্বেও সরকারের পদক্ষেপে আমাদের অর্থনীতি পূর্ণাঙ্গভাবে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। আমাদের সরকার সংকটকালে দেশের মানুষের পাশে আছে। মানুষের পাশে থাকবে। জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, জীবন-জীবিকার সুরক্ষা দেওয়া এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন হলে দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। মানুষের পাশে আমরা দাঁড়াব।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত