কাউনিয়া হাসপাতালে অনিয়মের চিত্র-২
জেনারেটর থেকেও চলে না, টর্চ-মোবাইলেই ভরসা!
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৭ | আপডেট : ২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩:৫৫
উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের চরম নজরদারির অভাবে কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর থেকেও চলে না প্রায় দেড়যুগ ধরে। মোবাইলের টর্চই রোগীদের ভরসা! দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যুৎ বিভ্রাটে রোগীদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর এবং ভুতুড়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও কর্তৃপক্ষের নজরে আসছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বিদ্যুৎ চলে গেলে কর্মরত ডাক্তার নার্সরা টর্চলাইট বা মোবাইলের আলোয় কাজ করতে হয়, যা এক ভুতুড়ে বা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে, ফলে রোগীদের ভোগান্তি ও সেবা ব্যাহত হয়। প্রায় ৪লাখ মানুষের ৫০ শয্যার হাসপাতালে দেড়যুগ আগের ৫০ কেভি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ১টি জেনারেটর ছিল যা ৩বছর ধরে সন্ধান নেই। এরপর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন আর একটি জেনারেটর প্রদান করা হলেও অজানা কারনে সেটিও চালানো হয়। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে কিছুদিন আগেই পুরাতন ভবনটি সংস্কার করা হলেও নি¤œমানের কাজে বছর নাঘুরতেই দেয়ালে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ঝুঁকিপূর্ণ দেয়ালের নিচেই প্রতিদিন চলছে ইমারজেন্সি চিকিৎসা সেবা। কোন কারনে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় লোডশেডিংয়ের সময় রোগীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে স্বজনদের দেখা গেছে হাতপাখা, কাগজ ও কাপড় নাড়িয়ে বাতাস করতে। রোগীর স্বজনরা জানান, বিদ্যুৎ চলে গেলে হাতপাখাই তাদের ভরসা। তাদের দাবি, রোগীদের কথা চিন্তা করে লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর বা অন্য কোনো উপায়ে ফ্যান গুলো চালানোর ব্যবস্থা করা। রোগীর স্বজন বলেন, আমার চাচা খুব অসুস্থ ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ভর্তি করেছি। শুনেছি হাসপাতালে জেনারেটর আছে কখনও সেটা চালু করতে দেখিনি। রোগীর স্বার্থে যে জিনিস ব্যবহার হয় না সেটা থেকে লাভ কী? আরেক রোগী বলেন, রোগীর সেবা করতে হাসপাতালে এসে অসহ্য গরমে হাফিয়ে উঠেছি এখন নিজেই রোগী হয়ে গেছি।
উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে একমাত্র হাসপাতালে সরকারের দেওয়া সকল সুযোগ-সুবিধা থাকার পরেও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৪ লক্ষাধিক জনগণ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, শুধু অপারেশনের ব্যবহারের জন্য তেল বরাদ্দ পাওয়া যায়। অন্য সময় বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটর চালানোর জন্য যে ডিজেল লাগে সেটার কোনো বরাদ্দ না থাকায় জেনারেটর চালান সম্ভব হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হাসপাতাল অন্ধকারে আচ্ছন্ন। জেনারেটর থাকলেও জনবলের অভাব ও জ্বালানি তেল বরাদ্দ না থাকায় একদিকে নষ্ট হচ্ছে সরকারি সম্পদ অপর দিকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুজয় সাহার কাছে জেনারেটর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি যোগদানের পর হাসপাতালে বড় জেনারেটটি সামান্য সার্ভিসিং এর মাধ্যমে এবং তেল বরাদ্দ সাপেক্ষে তা চালুর ব্যবস্থা করবো।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত