জুলাই ঘোষণাপত্রে সংগ্রামীদের ত্যাগ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে : হানিফ বাংলাদেশী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৮ |  আপডেট  : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৬

আজ ১৭ জানুয়ারী রোজ শুক্রবার সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে হানিফ বাংলাদেশীর দীর্ঘ ১০ বছরের আন্দোলনের সচিত্র ছবি প্রদর্শিত হয়। একটিভিস্ট  হানিফ বাংলাদেশী গত ১০ বছর যাবত উক্ত দাবি গুলো নিয়ে সারাদেশব্যাপি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রদর্শনী দেখেন ও তাদের মতামত প্রকাশ করেন।

গত ১৫ বছর যাবত দেশে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিলো। দেশের রাজনৈতিক দল গুলো এবং বিভিন্ন সংগঠন এবং দেশের সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে।

এ সময় হানিফ বাংলাদেশী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে সংগ্রামীদরে ত্যাগের সাথে বেইমানি  করা হয়।বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রক্লেমেশন ঘোষণাপত্রের দাবি জানিয়েছে। আমি তাদের এই দাবিকে স্বাগত জানাই।

জুলাই আন্দোলনে একটা প্রক্লেমেশন থাকা দরকার। তবে কোন আন্দোলন একক প্রচেষ্টা বা এক দিনের আন্দোলনে সংগঠিত হয়না, সংগ্রামীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের ফলে আন্দোলন র্পূণতা পায়।আমারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি গত ১৫ বছর আমাদের মতো যারা জীবনবাজী রেখে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন কেেরছ তাদের নাম প্রক্লেমেশনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আন্দোলন জীবনবাজি রাখা ত্যাগিদের অবদান ঘোষণা পত্রে অর্ন্তভুক্ত না করলে এই প্রক্লেমেশেন পূর্ণতা পাবেনা। এমনকি এই ঘোষণা পত্র জনগণের কাছে গ্রহণ যোগ্যতা পাবেনা। আমাদের মত ত্যাগিদের এই অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যায়ন করেনি। আমরা ঘোষণা করছি এই প্রক্লেমেশেনে আমাদের অবদান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

হানিফ বাংলাদেশী বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত দেশে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং দুর্নীতি দুঃশাসনরে বিরুদ্ধে এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে ৬৪ জেলায় পরপর ৪বার প্রদক্ষিণ করেছি। প্রতিবারই জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। দুর্নীতি দুঃশাসনরে বিরুদ্ধে ৪৯৫ উপজলো প্রদক্ষিন করে উপজলো নির্বাহী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। দেশে আমিই একমাত্র ব্যক্তি যে ৬৪ জেলায় ৪ বার প্রদক্ষিণ করেছি এবং ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করেছি। দীর্ঘ ৬ বছর আমি নিন্মের উল্লেখিত কর্মসুচি গুলো পালন করেছি। ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রতিবাদে ১৯ মার্চ ২০১৯ সালে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ১০০৪ কিলোমিটার পথ ৩৬ দিনে পায়ে হেটে পদযাত্রা করেছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য ৪ জুলাই ২০১৯ সালে নির্বাচন কমিশনকে পচাঁ আপেল দিয়ে  প্রতিবাদ জানিয়েছি। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে জনগণরে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদে আইন পাশের উদ্যোগ নিতে  সংসদ ভবনের চার পাশে ১৬ বার প্রদক্ষিণ করে স্পীকার বরাবর সম্মারকলিপি দিয়েছি। ২০১৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে দেশে সর্বগ্রাসী র্দুনীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৬৪ জেলায় গিয়ে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। দুর্নীতিবাজদরে উদ্দেশে প্রতিকী লালকার্ড প্রদর্শন করেছি। ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবীতে ঢাকা থেকে প্রতিকী লাশ কাঁধে নিয়ে পায়েঁ হেটে কুড়িগ্রামে ফেলানীর বাড়ি পর্যন্ত পদযাত্রা করেছি।

২০২১ সালরে ১লা জানুয়ারী ৬৪ জেলা প্রদক্ষণি করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীতে “র্মাচ ফর ডেমোক্রেসি” গণতন্ত্ররে জন্য ৬৭ হাজার গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছি। ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতিক বাতিলের দাবীতে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। আমার দাবির প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতিক বাতিল হয়েছে। 

২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন ও ভোটাধিকারের দাবীতে ভোটের বাক্স মাথায় নিয়ে ৬৪ জেলা প্রদক্ষিন করে রাষ্ট্রপতি বরবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমার দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে আইন পাশ হয়ছে। ২০২৩ সালের ১লা জানুয়ারি দুর্নীতি দুঃশসনের বিরুদ্ধে ৪৯৫ উপজলো প্রদক্ষিন করে উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তাদের  মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। ২০২৪ সালে সীমান্ত হত্যা ও ভারতীয় আগ্রসন বন্ধের দাবীতে সীমান্ত লাগোয়া ৩২ জেলায় প্রতীকী লাশরে মিছিল করেছি। ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছি। ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার দাবীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি  ভোটাধিকারের দাবীতে রাষ্ট্রপতির বঙ্গভবনরে সামনে মোমবাতি জালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি সার্চ কমিটি নয় আইন প্রণয়নরে মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনরে দাবীতে রাষ্ট্রপতির বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছি।

২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি  ভোটাধিকারের দাবীতে বঙ্গভবনরে সামনে মোমবাতি জেলায় অবস্থান র্কমসূচী পালন করেছি। ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের গুলি করার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছি। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানরে দিন শাহাবাগ মোড়ে অবস্থান র্কমসূচী পালন করেছি। এই ছাড়াও অন্যায়রে বিরুদ্ধে নাগরিক অধিকারের জন্য সব সব সময় প্রতিবাদ করি। উল্লেখিত কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে জেলায় জেলায় লাঞ্ছিত হয়েছি। কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছি। দীর্ঘ ৬ বছর আমি উল্লেখিত কর্মসূচী পালন করছি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত