জনগণের ঐক্য দেখে সরকার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে: ফখরুল
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৪:০৭ | আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮
বর্তমান সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে সবচেয়ে বড় ভয় পেয়েছে তারা; কারণ জনগণের ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের এই ঐক্য সরকারের পতন ত্বরান্বিত করবে।’
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (একাংশ) কাজী জাফর আহমেদ-এর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টি এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
এ সময় কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কাজী জাফর সারাটা জীবন রাজনীতির মাঠে চড়াই করে পার করেছে। তার দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম ছিল। গণতন্ত্রের পক্ষে শোষণমুক্ত সমাজের পক্ষে রাষ্ট্র নির্মাণের পক্ষে সারাটা জীবন তিনি লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। কখনও সরকারে থেকে, কখনও সরকারের বাইরে থেকে।’
তিনি বলেন, ‘আজ জাতি অত্যান্ত সংকটময় একটি সময় অতিক্রম করছে। গতকাল আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তার মুক্তির সংগ্রাম করছি, দীর্ঘদিন ধরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বলছি। এ সরকার নির্বাচিত নয়, তাই তাদের জনগণের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ নেই। তারা মনে করে, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা খালেদা জিয়া। এ কারণেই তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশকে সম্পূর্ণভাবে ফ্যাসিবাদী একনায়কতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ২২ আগস্ট থেকে চাল-ডাল-তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভোলায় আমাদের নেতা নূরে আলাম ও আব্দুর রহিম পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এরপর থেকে আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। বর্তমানে এ আন্দোলন দেশে বেগবান হয়েছে। প্রতিটি জায়গায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেমে আসছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় গুলি করে নেতাকর্মীদের আহত করছে। এতে করে এ সরকারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী চেহারা আবারও ফুটে উঠছে। তারা সবচেয়ে বড় ভয় পেয়েছে জনগণের একটা ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে এটি দেখে।
ফখরুল বলেন, জনগণের এ ঐক্য সরকারের পতনকে তরান্বিত করবে। আমরা বিশ্বাস করি- এবার রাজনৈতিকদলগুলোর একটা ঐক্য সৃষ্টি হবে। সবাইকে আমরা আহ্বান করেছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ভয়াবহ দানবীয় এ সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপির চলমান কর্মসূচিতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেমে আসছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ তাদের প্রতিবাদ করছে। এ জন্য সরকার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য সৃষ্টি হবে। আমরা সেই আহ্বানও করেছি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা সামনে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আসম আবদুর রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির (জাফর) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস, মাওলানা রুহুল আমীন, যুগ্ম-মহাসচিব কাজী নজরুল প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত