গাজীপুরে চার কারখানায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ১৩ কারখানায় ছুটি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:২০ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:২৮
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে বিভিন্ন দাবিতে চারটি কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে তাদেরকে এই কর্মবিরতি পালন করতে দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে জেলার ১৩টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে দুটি পোশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কোনাবাড়ীতে অবস্থিত এম. এম নীটওয়্যার লিমিটেড ও মামুন নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নেন।
জানা যায়, এম. এম নীটওয়্যার লিমিটেড ও মামুন নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত ৩ নভেম্বর বিভিন্ন দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কিছু দাবি মেনে নিলেও আরও কিছু দাবি উত্থাপন করে কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন তারা। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে গত ৪ নভেম্বর থেকে শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক কারখানার সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কর্তৃপক্ষ গত ৯ নভেম্বর কারখানা পুনরায় চালু করে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী এম. এম নীটওয়্যার লি. থেকে ৬৮ জন এবং মামুন নীটওয়্যার লি. থেকে ৪৫ জন শ্রমিককে টার্মিনেশন বা অব্যাহতি প্রদান করে। অন্য শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন কাজে যোগ দেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে তারা ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কাজ বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, এর আগে মালিক বলেছিল কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না। কিন্তু এতগুলো শ্রমিক কেন ছাঁটাই করা হলো এর প্রতিবাদেই আমরা কাজ বন্ধ করে বসে আছি।
এ বিষয়ে এম. এম নীটওয়্যার লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, যেসব শ্রমিকদের টার্মিনেশন বা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তাদের পাওনাদি শ্রম আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরও আজকে কিছু শ্রমিক কাজ বন্ধ করে বসে আসেন।
তিনি আরও বলেন, যে অবস্থা তাতে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।
অপরদিকে, মহানগরীর কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা গত এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে তিন দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন।
এ ছাড়াও, কোনাবাড়ী বাইমাইল এলাকায় কাশেম ল্যাম্পস কারখানার শ্রমিকরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল ও নাইট বিলসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে গত দুই দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, কোনাবাড়ীতে এম.এম নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন, যেন তারা কাজে যোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, আজও বিভিন্ন কারণে গাজীপুরে প্রায় ১৩টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত