গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে ইসরায়েল : সৌদি যুবরাজ
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩:৩৭
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ১৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। উঠেছে গণহত্যার অভিযোগও। এমন অবস্থায় ইসরায়েল গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। একইসঙ্গে গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা বলেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডকে “গণহত্যা” হিসাবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এক বছরেরও বেশি সময় আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে নিয়ে এটিই কোনও সৌদি কর্মকর্তার কঠোরতম প্রকাশ্য সমালোচনা।
সোমবার মুসলিম ও আরব নেতাদের এক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে সৌদি এই যুবরাজ লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলি হামলারও সমালোচনা করেন। রিয়াদ এবং তেহরানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত হিসাবে তিনি ইরানের ভূখণ্ডে হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্কও করেন।
এদিকে ইসরায়েলকে “আর কোনও আগ্রাসন না চালাতে” এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান মোহাম্মদ বিন সালমান। এসময় ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে উপস্থিত অন্যান্য নেতারা সৌদি আরবের এই ডি ফ্যাক্টো বা প্রকৃত নেতার সাথে যোগ দেন।
এছাড়া আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইতও গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনও কথার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা প্রকাশ করা যায় না।
এদিকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না করতে পারা “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা”। একইসঙ্গে ইসরায়েল গাজা ভখণ্ডের মানুষকে অনাহারে রাখছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ বলেছেন: “সংঘাতের তাৎক্ষণিক অবসান ঘটাতে এবং ইসরায়েলের আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত