খেয়ার কূলে আমার বাড়ি

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৯ |  আপডেট  : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬

দীপ্তেন্দু ব্যানার্জী
‐---------‐---

বাবার মুখে শুনেছিলাম 
ফরিদপুরে দেশের বাড়ি
ঠামির বুকে মুখ লুকিয়ে 
আশ মিটিয়ে কাঁদতে পারি
ওটাই আমার পিতৃডূমি 
ওইখানেতে যাবোই যাবো 
নিকোনো সেই দাওয়ায় বসে 
বেতের ধামায় মুড়কি খাবো
গোয়লন্দের স্টীমার হয়ে
তারপাশার ওই নদীর ঘাটে 
বিকেল বিকেল পৌঁছে যাবো
সূয্যি তখন বসবে পাটে
কাগদি গ্রামে যেতেই হবে, 
নৌকো বাঁধা সারি সারি 
সময়মতো পৌছে যাবো 
খেয়ার কূলে আমার বাড়ি।
খেয়ার ঘাটে নৌকো থাকে
ঠাম্মি আমার হাতটা ধরা
হাত ছাড়িয়ে এক দৌড়ে 
দাদুর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়া!
এটাই জেলা ফরিদপুর 
মহকুমা মাদারীপুর 
কাগদি গ্রামে ভেসে আসে 
দূর থেকে ওই আজান সুর...
তুলাষারে ভর্তি হয়ে 
বাবার মতো পদক পাবো 
জলপানিটা জোগাড় করে 
বিদেশবিভুঁই পালিয়ে যাবো।
গোয়ালখানা দর্মা ঘেরা
ভিতরে ঘাস রাশি রাশি
করিম চাচা রোজ সকালে 
দুধ দোয়াবেন, সরল হাসি। 
দাদু বলেন, আজকে ইলিশ 
চুন্নু মিয়ার হাতে ধরা 
ঠাম্মি বলে খোকন খাবে 
ইলিশ মাছের ডিমের বড়া।
হিজল পাতার ছায়ায় ঘেরা 
পাঁচখানি ঘর, একটি পাকা 
সেইখানেতেই দাদুর সাথে
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকা। 
মস্ত উঠোন, গাছ গাছালি 
আম, সবেদা, কাঁঠাল, কলা,
সাঁঝের প্রদীপ হাতে নিয়ে 
ঠাম্মি যাবে তুলসীতলা। 
আলের পথে কিছুটা দূর 
ফরিদপুরের শহরতলি, 
দাদুর সাথে হাটে যাবো 
হাতে নিয়ে চটের থলি।
নুন তেলটা আনতে হবে 
অল্প করে মন্ডা মিঠাই 
দাদুর কাছে বায়না করে 
তিনটে ঘুড়ি, একটা লাটাই।
রাতের বেলা ঠাম্মি দাদুর     
মধ্যে শুয়ে গল্প শোনা
কয়দিনে হয় কয়খানি রাত?
অংক দিয়ে যায় না গোনা...

...ঘুম ভেঙেছে, চোখ খোলে না
পাই না খুঁজে হাতের লাঠি 
কানে আসে প্রিয়জনের 
আর্তনাদ আর কান্নাকাটি।
এবার তবে দিন ফুরালো 
চড়বো এবার নতুন গাড়ি 
সময়মতো পৌছে যাবো 
খেয়ার কূলে আমার বাড়ি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত