খালেদা জিয়াকে আদৌ বিদেশ নেয়ার প্রয়োজন আছে কি-না প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
প্রকাশ: ৮ মে ২০২১, ১৬:১১ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আদৌ বিদেশ নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কি-না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। বিএনপি কেনো যে তাকে বিদেশ নিয়ে যেতে চায় সেটি বোধগম্য নয়। কারণ দেশেই তো বেগম জিয়া সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন।
শনিবার (৮ মে) দুপুরে বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস-২০২১ উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
দেশের দুই বারের প্রধানমন্ত্রী বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বেগম খালেদা জিয়া আমার কাছে একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এটিই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা। বেগম খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পান তার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা এখন বাংলাদেশে পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি ও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে। যে সব দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, সেখানে করোনা মহামারিতে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্রতি দেখতে পাচ্ছি বিএনপি দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নয়। এনিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। তাদের সব চিন্তা এখন কেন্দ্রীভূত বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে। বেগম খালেদা জিয়ার তাপমাত্রা আছে কি নেই, এটি কত ডিগ্রি আছে, হাঁটুর ব্যথা আছে নাকি নেই। বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি এসব কিছুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের চিন্তাটা শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যে নিমগ্ন না রেখে জনগণের পাশে দাঁড়ান। যেভাবে মানুষের দোরগোড়ায় আওয়ামী লীগ খাদ্য সহায়তাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছে, সেভাবে আপনারাও মাঠে এসে জনগণের কাছে বিতরণ করুন। তারপর আমাদের ভুলত্রুটি যদি থাকে সেটার সমালোচনা করার অধিকার আপনাদের তৈরি হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপিসহ তাদের যেসব মিত্র সরকারের সমালোচনা করে এবং যারা রাত ১২টার পর টেলিভিশনের পর্দা গরম করে তাদের দূরবীন দিয়েও দেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা কেউ কি ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির মধ্যে আছে? সেখানে নেই। তারা শুধু সমালোচনার মধ্যে আছে। আমরা কী কাজ করছি সেটার সমালোচনা করা ছাড়া তাদের কোনো নেই।
তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতি হচ্ছে করোনার জন্য যে ১২ হাজারেরও বেশি বেড রয়েছে তার ৭০ ভাগ বেড খালি আছে। অনেক আইসিইউ বেডও খালি আছে। করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত সফলভাবে কাজ করেছে। কিন্তু সমালোচকদের সমালোচনা থেমে নেই।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষ প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে, অন্যকে নিয়ে ভাবে না। ক্রমাগত যন্ত্রের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষও যেন যন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের যেমন অনুভূতি নেই, মানুষও অনুভূতিহীন পদার্থে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে রেড ক্রিসেন্টের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্তমানবতার পাশে দাঁড়িয়ে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যেভাবে কাজ করছেন সেটি সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি ইউনিট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এমএ ছালাম ও করোনাকালে ভূমিকা রাখা কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. শেখ শফিউল আজমের সভাপতিত্বে ও যুব রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান গাজী ইফতেখার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সংবর্ধিত অতিথি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এমএ ছালাম, জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আসলাম খাঁন, সিটি ইউনিটের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত