কোহলিদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে উড়ে গেলেন মোস্তাফিজরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৫৭ |  আপডেট  : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭

৭.২ ওভারে ৪৩ রানে নেই ৪ উইকেট। আউট হয়ে গেছেন জস বাটলার, ডেভিড মিলার ও সঞ্জু স্যামসনের মতো ব্যাটসম্যানরা। মুম্বাইয়ে আজ এমন শুরুর পরও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৭ রান তুলেছে রাজস্থান রয়্যালস। ইনিংস শেষে রাজস্থানের অধিনায়ক স্যামসন হয়তো ভেবেছিলেন—যাক বাবা, বাঁচা গেল, অবশেষে লড়াইয়ের পুঁজি তো পাওয়া গেল! তখন কে জানত এমন বিধ্বংসী হয়ে উঠবেন প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের দুই ওপেনার বিরাট কোহলি ও দেবদূত পাড়িক্কাল! তাঁদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কাছেই তো ২১ বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে ম্যাচটা হেরে গেল রাজস্থান।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক কোহলি টস জেতার পর বললেন, এই পিচে রান হয় অনেক। এর সঙ্গে শিশিরের ব্যাপারটি মিলিয়ে তাঁরা পরে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিদ্ধান্তটা যে কতটা সঠিক, ব্যাট হাতে দেখিয়েছেনও কোহলি। তবে বেঙ্গালুরুর ইনিংসের প্রথম দুই ওভারের পর হয়তো একটু আশাবাদী হয়েছিলেন রাজস্থানের অধিনায়ক স্যামসন। শ্রেয়াস গোপালের করা প্রথম ওভারের ৬টি বলই খেলেছেন কোহলি। রান করেছেন ‘মাত্র’ ৮। চেতন সাকারিয়ার পরের ওভার থেকে আসে মাত্র ৬ রান।

কিন্তু এরপর থেকেই পাড়িক্কাল আর কোহলি ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকেন। প্রথম ৬ ওভার থেকে তাঁরা তুলে নেন ৫৯ রান। ১০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরুর রান বিনা উইকেটে ১০৭। ১৫ ওভার শেষেও উইকেটের জায়গাটা শূন্যই। আর রানের ঘরে ১৬২। শেষ পর্যন্ত এই ওপেনিং জুটিই বেঙ্গালুরুকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছে। পাড়িক্কাল অপরাজিত ছিলেন ৫২ বলে ১০১ রান করে। ইনিংসটিতে তিনি মেরেছেন ১১টি চার ও ৬টি ছয়। আর কোহলি অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছয়ে ৭২ রান করে। কোহলিদের এটি চার ম্যাচে টানা চার জয় এবারের আইপিএলে।

রাজস্থানের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ইকোনমি ছিল ক্রিস মরিসের। ১২.৬৬ ইকোনমিতে তিনি ৩ ওভারে দিয়েছেন ৩৮ রান। শ্রেয়াস গোপাল ৩ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ৩৫ রান, ইকোনমি। রাজস্থানের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কিপটে ছিলেন চেতন সাকারিয়া, ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩৫ রান। বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন দ্বিতীয় কিপটে বোলার। ৩.৩ ওভারে ৩৪ রান দিয়েছেন তিনি।

এমন ‘পাটা’ উইকেটে রাজস্থানের যে আরও বেশি রান করার প্রয়োজন ছিল, সেটা তো বলাই যায়। কিন্তু কোথায় কী! মোহাম্মদ সিরাজের করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে গেলেন বাটলার। চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়া ইংলিশ ওপেনার আজ ফিরলেন ৮ বলে ৮ রান করে। সঙ্গীর বিদায়ের শোক বেশিক্ষণ সওয়ার ইচ্ছা হলো না ভোহরাও। কাইল জেমিসনের করা পরের ওভারের পঞ্চম বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। বাটলারের চেয়ে ইনিংসে বল খেলেছেন একটি বেশি, রান করেছেন একটি কম। এরপর ফিরে গেলেন ডেভিড মিলারও।

স্যামসন আর শিবম দুবে মিলে রাজস্থানের ইনিংস মেরামতের চেষ্টা শুরু করেন। এসেই দ্বিতীয় বলে চার মেরে শুরু করেন দুবে। এরপর ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে চার মারেন স্যামসন। ওই ওভারে ১০ রান নিয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩২। কিন্তু অষ্টম ওভারে আবার ধাক্কা। ওয়াশিংটন সুন্দরের প্রথম বলে ছক্কা মারলেন স্যামসন। কিন্তু পরের বলে নিষ্ঠুর বদলা নিলেন সুন্দর। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি দিয়ে আইপিএলে বেশ আলোচনায় আসা স্যামসনকে পরের বলে মিড উইকেটে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ বানান। ৪৩ রানে ৪ উইকেট হয়ে যায় রাজস্থান।

এখান থেকে রাজস্থান যে ১৭৭ রান তুলতে পেরেছে, এতে অবদান দুবে, রিয়ান পরাগ ও রাহুল তেওয়াতিয়ার। আগের তিন ম্যাচে সব মিলিয়ে ৪২ রান করা দুবে কাল করেছেন ৩২ বলে ৪৬ রান। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি এসেছে তেওয়াতিয়ার ব্যাট থেকে। ৪টি চার ও ২টি ছয়ে ২৩ বলে তিনি করেছেন ৪০ রান। আর পরাগের রান ১৬ বলে ২৫। বেঙ্গালুরুর পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সিরাজ ও হর্শাল প্যাটেল। সিরাজ ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৭ রান, আর ৪ ওভারে হর্শাল রান দিয়েছেন ৪৭।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত