লৌহজং উপজেলা নির্বাচন
"কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান"
প্রকাশ: ২ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২০ | আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:০০
বিক্রমপুরের লৌহজং উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই এখানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রভাব বিস্তারে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন।
চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর তৎপরতা চোখে পরার মত। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহ সভাপতি আবদুর রশীদ শিকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও এফবিসিআইর পরিচালক বি,এম শোয়েব, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু ফয়সাল নীপু ফকিরের নির্বাচনি তৎপরতা চোখে পরার মত। এছাড়া সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির বেপারী ও আওয়ামী লীগ নেতা শিবলি বেপারী মাঠে আছেন।
উপজেলার হাট বাজার চায়ের দোকানে বিল বোর্ড পোস্টার ফ্যাস্টুন শোভা পাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি সংশোধন করায় এখন রঙ্গিন পোষ্টারে সয়লাব। নির্বাচন যেহেতু এবার দলীয় ভাবে মনোনয়ন আওয়ামী লীগ দিচ্ছে না সেহেতু আওয়ামী লীগের নেতারা স্ব স্ব উদ্যোগে প্রচারে মাঠে নেমেছেন। প্রায় প্রতিদিন পাড়া গ্রামে উঠান বৈঠক ইফতার মাহফিল ও বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায়সহ এলাকার বিভিন্ন মন্দিরে যেয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে প্রার্থীরা সৌহার্দ্য ও মতবিনিময় করছেন।
১০ টি ইউনিয়ন নিয়ে লৌহজং উপজেলা গঠিত। ইউনিয়নসমূহ হলো: মেদিনীমন্ডল, কুমারভোগ, হলদিয়া, কনকসার, লৌহজং-তেউটিয়া, বেজগাঁও, বৌলতলী, খিদিরপাড়া, গাঁওদিয়া, কলমা। উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৫ জন লক্ষ ভোটার এবার নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন।
পদ্মার তীরঘেষা লৌহজংয়ের ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ধাইদা ইউনিয়ন নদীভাংগনে বহু আগে বিলীন হয়। লৌহজং- তেউটিয়া দুটি ইউনিয়ন একত্রিভূত হয়।
পদ্মার বালু উত্তোলন ও নদীভাঙনে পদ্মা তীরবর্তী লৌহজং উপজেলা নির্বাচন এবার বড় টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রার্থীরা নদীভাংগন রোধে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় লাভের চেষ্টা করছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এখন স্ব স্ব প্রার্থীদের নিয়ে ত্রিধারা-কোথাও চতুর্থ ধারায় বিভক্ত।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের রাজশাহী বিভাগীয় আওয়ামী লীগের সভায় বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কোন এমপি কারো পক্ষ হয়ে কাজ করতে পারবেন না। এই দৃষ্টিতে দেশের কোথাও কোন এমপি, মন্ত্রী বা দলীয় নেতারা দলীয় ভাবে প্রচারে নামতে পারছেন না। একারণে এখানে এবার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে সকল প্রার্থীদের।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে জাকির বেপারী এর আগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও রশীদ শিকদার বোলতলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। বিএম শোয়েব এলাকার সমাজসেবক হিসাবে বহুদিন যাবৎ তার পিতার নামে গঠিত নান্নু বেপারী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষা ও সমাজহিতৈষী নানা কাজ করে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন। নিপু ফকির আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আবদুর হামিদের সন্তান হিসাবে ও গত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় আছেন। প্রার্থীর স্ব স্ব কর্মীরা বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র্য মেদিনী এই পণ নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করছেন। আশার কথা প্রার্থীরা জনমনে নানা ভাবে আলোচিত সমালোচিত হলেও যেকোন সামাজিক কর্মকান্ডে ঐক্যবদ্ধ।
লৌহজংয়ের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কে ঘিরে শো ডাউন চলছে। হোন্ডা মিছিল সহ নানা ভাবে ভোটারদের নজর কারার চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেছেন হোন্ডার শো ডাউন সাধারণ মানুষ ভাল চোখে দেখছেন না, বিশেষ করে উচ্চ স্বরে হর্ন বাজানো।
বিএনপি বরাবরের মত স্থানীয় সরকারের নির্বাচন বয়কট করায় তাদের ভোট ব্যাংকও এই নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর। একারণে প্রার্থীরা বিএনপি'র ভোটারদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
লৌহজং উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে (১ এপ্রিল) দ্বিতীয় ধাপের তফসিল চূড়ান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ এপ্রিল। মনোনয়ন পত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল। মনোনয়ন বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ২৯ এপ্রিল। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। ভোট গ্রহণ ২১ মে।
এলাকার সুশীল সমাজ মনে করেন এই নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতামূলক, তবে কোন অবস্থায় যেন কেউ এমন কোন কাজ করবেন না যা প্রতিহিংসামূলক হয়।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত