কেজিতে ১৪ টাকা বাড়ল দেশি চিনির দাম
প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০২২, ১১:৫২ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১
বাজারে চিনি সংকটের মধ্যেই সরকারি কারখানায় উৎপাদিত চিনির দাম একলাফে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিনির নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার মূল্যের সাথে ‘সামঞ্জস্য রেখে’ প্রতি কেজি দেশি চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ করা হয়েছে।
করপোরেশনের উৎপাদিত প্রতি মেট্রিক টন চিনির দাম মিল পর্যায়ে আগে ছিল ৭৪ হাজার টাকা। দাম বাড়িয়ে এখন তা ৮৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ মিল পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮৫ টাকা।
ডিলার পর্যায়ে প্রতি মেট্রিক টনের দাম ঠিক করা হয়েছে ৮৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনি ডিলাররা কিনতে পারবেন ৮৭ টাকায়।
এ ছাড়া মিলগেইটে ১ কেজির চিনির প্যাকেটের দাম ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০ টাকা। আর ওই প্যাকেট করপোরেট সুপারশপ বা চিনিশিল্প ভবনের বেইজমেন্ট থেকে কিনতে লাগবে ৯২ টাকা।
বাংলাদেশে চিনির মোট চাহিদার বেশিরভাগটাই আমদানি করতে হয়। দেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ টন পরিশোধিত চিনির চাহিদা রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলো থেকে আসে সর্বোচ্চ এক লাখ টনের মতো ‘লাল’ চিনি। অপরিশোধিত চিনি আমদানির পর তা পরিশোধন করে দেশীয় মিলগুলো বাজারে সরবরাহ করে।
ডলারের দরের ঊর্ধ্বগতিতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে গত ৬ অক্টোবর চিনির দর কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে খোলা চিনির বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ টাকা কেজি, আর প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি হয় ৯৫ টাকা।
তবে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত চিনি ১২০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় দোকানে চিনি মিলছে না বলে অভিযোগ আসছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজার দরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায়, যা এক মাস আগে ৯০ থেকে ৯২ টাকা ছিল।
বাজারে চিনির দর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পর গেল ২৪ অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ট্রাকসেল শুরু করেছে। সেখানে দীর্ঘ সারি ধরে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ এক কেজি চিনি কিনতে পারছেন ৫৫ টাকা দরে।
চিনির দামে অস্থিরতার মধ্যে গত ২২ অক্টোবর খুচরা ও পাইকারি বাজারের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরে পরিশোধনকারী মিল পরিদর্শন করেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান ওই দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “সিটি ও ফ্রেশ রিফাইনারির কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সক্ষমতার অর্ধেকে নেমেছে তাদের উৎপাদন। কোম্পানির লোকজন জানিয়েছেন, গ্যাস সংকটে উৎপাদন কমেছে।”
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন, আমদানি করা চিনির যে মজুদ আছে, তা দিয়ে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।তবে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় চিনির পরিশোধন ব্যাহত হচ্ছে৷
“যে সমস্যা পেয়েছি, সেটি হলো গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে ৬৬ শতাংশের বেশি চিনি উৎপাদন করতে পারছে না মিলগুলো।”
তবে গ্যাস পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটছে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “গ্যাসের সাপ্লাই স্বাভাবিক হলে যে পরিমাণ চিনি দরকার, তা উৎপাদন সম্ভব হবে।”
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত