কুমিল্লাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৫ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৭

 বিপিএলের আজ ইতিহাস গড়েছে ফরচুন বরিশাল। টুর্নামেন্টের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল দলটি। মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরপর ব্যাট করতে নেমে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৩৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসের পর ব্যাট হাতে শেষদিকে ঝড় তুলেছিলেন আন্দ্রে রাসেল। ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডারের ১৪ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংসেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের সংগ্রহ গড়ে কুমিল্লা। পরে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের ৩৯ রানের পর কাইল মায়ার্সের ৩০ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছে বরিশাল। 

দুর্দান্ত এই জয়ে কুমিল্লার হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ করে প্রথম শিরোপা জিতেছে বরিশাল। একই সঙ্গে বিপিএল ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় শিরোপা জিতলেন অধিনায়ক তামিম। বরিশালের অন্য দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারের প্রথম বিপিএল শিরোপাও এটি। 

১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বরিশাল। উদ্বোধনি জুটিতেই ৭৬ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল দলটি। তামিমের সঙ্গে ওপএনিংয়ে নেমে দেশসেরা এই ওপেনারকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মেহেদী মিরাজ। কুমিল্লার বোলারদের সামলে আজ দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন এ দুজন।

উদ্বোধনী জুটিতে মিরাজের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটি গড়ার পথে আজ ২৬ বলে ৩৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক তামিম। সমান ৩টি করে চার এবং ছয়ে ৩৯ রান করে মইন আলীর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি।

এদিকে তামিম ফেরার পর দ্রুতই ফিরেন মিরাজও। ২৬ বলে ২৯ রান করে দলীয় ৮২ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এদিকে দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পরও দলকে আজ জয়ের পথ দেখিয়েছেন মায়ার্স এবং মুশফিকুর রহিম জুটি।

কুমিল্লার বোলারদের সামলে জুটি গড়ে তৃতীয় উইকেটে বরিশালের হয়ে প্রতিরোধ গড়েন এই দুজন। দুজন মিলে গড়েছিলেন ৪২ বলে ৫৯ রানের জুটি। ৩০ বলে ৫ চার আর ২ ছয়ে ৪৬ রান করেন মায়ার্স। ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডারের দায়িত্বশীল এই ইনিংসেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় বরিশাল। তবে দলীয় ১৪৪ রানে মায়ার্স ফেরার পর দ্রুতই ফিরেন মুশফিকও। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে তামিমের দল। 

তবে শেষ পর্যন্ত বরিশালের জয় নিশ্চিত করে মিলার-মাহমুদউল্লাহ জুটি। শেষদিকে কিছুটা চাপে পড়লেও এই জুটি ৬ বল হাতে রেখেই বরিশালের ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছে। 

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে কাইল মায়ার্সের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেউ বাউন্দারি হাঁকিয়ে দুর্দান্ত শুরুর আভাস দিয়েছিলেন কুমিল্লার সুনীল নারাইন। তবে ক্যারিবীয় এই ক্রিকেটার নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ওই ওভারের পঞ্চম বলেই আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এদিকে নারাইন ফেরার পর ক্রিজে আরেক ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। 

লিটনের সঙ্গে ব্যাত হাতে কুমিল্লার হয়ে আজও দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন হৃদয়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাইফুদ্দীন আহমেদের বলে দুইটি চার হাকিয়েছিলেন এই টাইগার ব্যাটার। তবে তিনিও আজ নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে জেমস ফুলারের করা বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে তিনি ৯ বল খেলে ৩ চারে করেন ১৫ রান। 

এদিকে হৃদয় ফেরার পর লিটনও আউট হন দ্রুতই। ফুলারের করা বলে হৃদয়ের মত একই আউট হয়ে ব্যক্তিগত ১৬ রানে সাজঘরে ফিরেন কুমিল্লার অধিনায়ক। বরিশালের হয়ে গুরুত্বপূর্ন এই দুইটি ক্যাচই নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। 

দ্রুত হৃদয়-লিটনকে হারিয়ে বিপাকে পড়া কুমিল্লার হাল ধরতে এরপর ক্রিজে জনসন চার্লসের সঙ্গী হন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এ দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে গড়েন ২৩ রানের জুটি। ওবেদ মযাককয়ের বলে তামিমের মুঠোবন্দী হয়ে চার্লস আউট হলে ভাঙ্গে এ জুটি। দলীয় ৬৫ রানে চার্লস ফেরার পর মাঠে নামেন মঈন আলী।

তবে ইংলিশ এই অলরাউন্ডারও আজ দলের হাল ধরতে পারেননি, মেহেদী হসানা মিরাজের থ্রোতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এদিকে একপ্রান্তে উইকেট হারালেও অপরপ্রান্তে কুমিল্লার রানের চকা সচল রেখেছেন অঙ্কণ। মঈন ফেরার পর জাকের আলী অনিকের সঙ্গে জুটি গড়ে দলীয় সংগ্রহ বাড়িয়ে নিয়েছেন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অনিক এবং অঙ্কণ মিলে গড়েন ২৯ বলে ৩৬ রানের জুটি। এদিকে ৩৫ বলে ৩৮ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলার পর সাইফুদ্দীন আহমেদের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন অঙ্কণ। এদিকে অঙ্কণ ফেরার পরে মাঠে নেমে ব্যাট হাতে ঝড়ই তুলেছিলেন রাসেল। 

উনিশতম ওভারে জেমস ফুলারের তিন বলে তিন ছয় হাঁকিয়ে কুমিল্লাকে বড় লক্ষ্য এনে দেয়ার পথেই ছিলেন তিনি। ৮ বলে করেছিলেন ২৬ রান। তবে বরিশালের হয়ে শেষ ওভারে ভালো বোলিং করেছেন সাইফুদ্দীন। শেষ ওভারে কোনো বাউন্ডারি না হওয়ায় কুমিল্লা শেষ পর্যন্ত থামে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানেই। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত