কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদের গর্ভে বিলীন বসতবাড়ি, আতঙ্কে নদীর পাড়ের মানুষ
প্রকাশ: ৯ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৪৬ | আপডেট : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭
বৃষ্টির প্রভাবে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদারীপুরের কালকিনি আড়িয়াল খাঁ নদের পানি। এতে করে প্রতিবছর নতুন করে শুরু হয় ভাঙ্গন। এ ভাঙ্গনের কবলে পরে ইতি মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশত একর বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি, বাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাইক্লোন সেন্টার ও মসজিদ। এছাড়া বিগত দিনে নদীভাঙনে প্রায় কয়েকশত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙ্গন আতঙ্ককে রয়েছে নদীর পাড়ের প্রায় শতাধিক পরিবার, বাজার, মসজিদ ও বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। যে কোন সময় রাক্ষুসী আড়িয়াল খাঁ নিয়ে যেতে পারে তাদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এদিকে অনেকে বসতবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে অন্যস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। অপরদিকে নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে স্থানীয় এম.পি তাহমিনা বেগম, উপজেলা চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বিভিণœ এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে ভাঙ্গনের চিত্র।
সরেজমিন ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার প্রত্যন্তঞ্চল সাহেবরামপুর এলাকার পূর্ব সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট, নতুন আন্ডারচর, কামালেরহাট, সিডি খাঁনের নতুন চরদৌলাত খাঁন. বাঁশগাড়ীর আউলিয়ারচর, পৌর এলাকার লক্ষীপুর পখিরা গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর তান্ডবে বিলিন হয়ে গেছে নদের পারের হাজারো বাড়িঘর। আড়িয়াল খাঁ নদে গর্ভে চলে গেছে পূর্ব সাহেবরামপুর গ্রামের হিরন সরদার, সাহাদাত সরদার, জালাল সরদার, মজিবর বেপারী, আক্কাস আকন, মোয়াজ্জেম ফকির, শিরাজ ফকির, মোশারফ সরদার, শাহাবুদ্দিন সরদার ও সাবেক ইউপি সদস্য আদেল বেপারীর বসতঘরসহ প্রায় শতাধিক বাড়িঘর। এ ছাড়া নতুন করে বর্তমানে ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে আলী সরদার, সবুজ সরদার, লতীফ সরদার, শাহীন সরদার, সজীব বেপারী, সুলতান বেপারী, স্বপন বেপারী, কালাম বেপারী, মন্টু সরদার, বাদশা হাওলাদার, আলিম সরদার, শাহাদাত সরদার, আজিজুল ফকির ও সোহাগ ফকিরসহ শতাধিক বাড়িঘর। অপরদিকে বর্তমানে নুতন আন্ডারচর গ্রামের চানমিয়া সরদার, বজলু সরদার, কামাল হাওলাদার, বিউটি বেগম, হাচিনা বেগম ও দাদন সরদারের বাড়িঘর আড়িয়াল খাঁ নদে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে নতুন আন্ডারচর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন কবলিত মানুষ তাদের ভিটামাটি হারিয়ে পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আসিকুর রহমান ও সাহানারা বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে আমাদের পুরো গ্রাম নদীর পেটে চলে যাবে।
আন্ডারচর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদ বিগতদিনে হাজারো বসতবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। বর্তমানে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করা হলে বাকি ফসলি জমি, বাজর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনমতে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত