কারও নির্দেশ ছাড়া সে কাজটি করেনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৪৬ | আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৬
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃংখলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই লোকটি কার প্ররোচনায়, কার নির্দেশে, কীভাবে এই কাজটি করল। সে তো প্ল্যান মাফিক করেছে। কাজেই নির্দেশিত হয়ে কিংবা কারও প্ররোচনা ছাড়া এ কাজটি করেছে বলে আমরা এখনও মনে করি না। তাকে ধরতে পারলে আমরা বাকি তথ্য উদ্ধার করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করছি।
কুমিল্লার ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কবে জনসম্মুখে আনা হবে বা এ ঘটনার সর্বশেষ আপডেট কী, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার যে টার্গেট আমরা আগেই বলেছি। আমরা সুনিশ্চিত, যে লোকটি করেছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাকে আমরা চিহ্নিত করেছি। কুমিল্লা মাজারের সঙ্গে যে মসজিদ, সেটা প্রসিদ্ধ মসজিদ আপনারা জানেন। সে লোকটি রাত ৩টার দিকে কয়েকবার গেছে। সেখানে তিনি মসজিদের খাদেমের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যারা এ কাজে অভিজ্ঞ, তারা দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুনিশ্চিত হয়েছেন, এই ব্যক্তিটি মসজিদ থেকে কোরআন শরীফ এনে রেখেছেন, এটা তারই কর্ম। আমরা যতটুকু দেখেছি, লোকটি কোরআন শরীফ এনে মূর্তির কোলে রেখে মূর্তির গদাটি কাঁধে করে নিয়ে আসছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সে কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে না। যারা তাকে পাঠিয়েছিল হয়তো আমি এখনও বলতে পারছি না, তারা তাকে লুকিয়ে রাখতে পারে। আমরা তাকে বের করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছি।
জানা যায়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত ওই তরুণ কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার নূর আহাম্মদ আলমের ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৫)। তিনি বিভিন্ন মাজারে এবং যত্রতত্র ঘুরে বেড়ান।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ওই তরুণ পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছে, তাকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনই তিনি সাংবাদিকদের কাছে ওই তরুণের নাম বলতে চান না।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতীয় সমন্বয় সভার বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কক্সবাজার এবং ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে কোস্টগার্ডকে সেখানে আরও শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হবে। সন্ধ্যার পর মিয়ানমার থেকে কোনো ইঞ্জিন চালিত বাহন আসবেনা। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে যোগাযোগ আরও জোরদার করতে হবে। নাফ নদীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি আরও বাড়ানো হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, বাকি রোহিঙ্গাদের ডিসেম্বরের মধ্যে ভাসানচরে নেয়া হবে। মহিবুল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারাই এই হত্যার সাথে জড়িত।
বিজিবি সদস্যদের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তে নিরপরাধ কাউকে গুলি করেনা; সীমান্ত রক্ষার জন্য তারা যা যা করা প্রয়োজন তাই করে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত