কাজী হায়াতের আক্ষেপ, মেয়েটার দুইটা বাচ্চা কী হবে ওদের?

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:২৫ |  আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩

চলচ্চিত্র ও নাটকের অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর হত্যাকাণ্ডের খবর মঙ্গলবার সকালেই শুনে আঁতকে ওঠেন বরেণ্য পরিচালক কাজী হায়াৎ। ১৯৯৮ সালে এই পরিচালকের হাত ধরেই চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছিলেন শিমু। ‘এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসা উচিত। যে বা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। এমন শাস্তি, যাতে আর কোনো দিন কেউ যেন এমন অপরাধের চিন্তাই করতে না পারে,’ প্রথম আলোকে বললেন কাজী হায়াৎ।

গত সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তাঁর অপমৃত্যুর খবর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। রাস্তার পাশে অভিনেত্রী শিমুর বস্তাবন্দী লাশ পাওয়ার খবর শুনে হতবাক বরেণ্য এই পরিচালক।

কাজী হায়াৎ বলেন, ‘কিচ্ছু বলার নেই আমার। শিমু আমার ছবিতে কাজ করেছিল। মেয়েটা আমার চোখে ভীষণ ভালো ছিল। মান্না ওকে আদর করত, আমিও ওকে ভালো জানতাম। কিন্তু আজ বস্তাবন্দী লাশের কথা শুনে তো বিস্মিত হলাম। খুবই দুঃখজনক। ভীষণ দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কি একটু অবনতি ঘটল? নাকি এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’

শিমুকে নিয়ে কাজী হায়াৎ বললেন, ‘শিমু একজন শিল্পী। আফটার অল দারুণভাবেই শিল্পীমনা ছিল। তীব্র ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র এবং শিল্প অঙ্গনে কিছু করার। এই ভাবে বস্তাবন্দী লাশ হওয়া খুব দুঃখজনক। এমনটা আর যেন না হয়, তেমনটাই চাওয়া হবে। কিন্তু ও যে এভাবে চলে গেল, এটা খুবই দুঃখজনক। তবে শিমু চলে গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসা উচিত। যারা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আর কোনো দিন কেউ যেন এমন চিন্তাই করতে না পারে।’

রাইমা ইসলাম শিমু বেশ কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্রজগতে আলোচনায় ছিলেন না। নতুন কোনো চলচ্চিত্রে তাঁকে দেখা যায়নি। কোনো খবরের শিরোনামে ছিলেন না প্রয়াত এই অভিনেত্রী। করোনার মধ্যে হঠাৎ এই চিত্রনায়িকাকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ হারানো ১৮৪ জনের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে সোচ্চার হতে দেখা গেছে। তিনি ছিলেন ভোটাধিকারবঞ্চিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক।

শিমুর খোঁজ প্রথম কীভাবে পেয়েছিলেন কাজী হায়াৎ—এমন প্রশ্নে তিনি বললেন, “ওর ভাই খোকন এফডিসিতে ঘোরাঘুরি করত। তার সঙ্গে মান্নার ভাইয়ের যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রে মান্নার সঙ্গেও পরিচয়। একদিন শিমুকে এনে মান্না বলল, হায়াৎ ভাই, দেখেন তো এই মেয়েটা চলে কিনা? চলচ্চিত্রে অভিনয় করার তাঁর খুব আগ্রহ। আমিও বললাম, ওকে। আমার প্রথম সিনেমা ‘বর্তমান’ প্রথম কাজ করল। এরপর ‘মিনিস্টার’–এ অভিনয় করে। দুইটা সিনেমায় মান্নার অনুরোধে শিমুকে নেওয়া।”

শিমুকে ‘বিষ্ণুপদ’ নামে ডাকতেন বলে জানালেন কাজী হায়াৎ। কারণ হিসেবে বললেন, ‘আমাদের গ্রামে বিষ্ণুপদ নামে একজন হিন্দু ভদ্রলোক ছিলেন। তাঁর চেহারার সঙ্গে শিমুর চেহারায় মিল ছিল। শিমু ছিল ওই ভদ্রলোকের মতো নম্র আর ভদ্র। খুব একটা কথা বলত না। চুপচাপ শুনত। শান্ত মেজাজের। আহা, সেই শান্ত মেয়েটাকে কারা এভাবে মারল! আহ্‌হা...। মেয়েটার তো একটা মেয়ে আর একটা ছেলেও ছিল। কী হবে ওদের!’ 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত