কাউনিয়ায় সুপারি চাষে লাভবান কৃষক

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ |  আপডেট  : ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩:৫৭

কৃষি অর্থনীতিতে কাউনিয়ার সুপারি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বিগত বছর গুলোর চেয়ে চলতি মৌসুমে সুপারির দাম ভাল পাওয়ায় চাষীরা বাগান তৈরীতে ঝুঁকে পড়ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে এ অঞ্চলে ব্যাপক সুপারী বাগান গড়ে তুলতে পারলে পালটে যাবে রংপুরের কাউনিয়ার কৃষি অর্থনীতি।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ও হাট-বাজার ঘুরে চাষিদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রকৃতির বৈরি আবহাওয়া ও কাটবিড়ালীর কারনে সুপারির ফলন কম হলেও ভাল দাম পাওয়ায় সুপারি চাষীরা বেজায় খুশী। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় বাড়ীর উঠানে, রাস্তার ধারে, জমির আইলে সুপারীর বাগান রয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। প্রতি বছর সুপারি উৎপাদন হয় প্রায় ৮ থেকে ১০হাজার মেট্রিক টন। সংখ্যায় যার পরিমান ১২ কোটি পোন সুপারী। এ বছর এক পোন (৮০টি) সুপারি ছোট আকারের ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, আর বড় আকারের ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চলতি বছর চাষীরা সবচেয়ে বেশি সুপারীর দাম পেয়েছে। সুপারি বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। সুপারি গাছের উৎপত্তি ফিলিপাইনে হয়েছ বলে মনে করা হয়। তবে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, পাকিস্তান, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে সুপারি চাষ হয়। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাসহ উত্তরবঙ্গের রংপুরের কাউনিয়ায় সুপারির চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। খোপাতি গ্রামের সুপারী বাগান মালিক নজরুল ইসলাম জানান বৈরি আবহাওয়া, খরা, ও কাঠবিড়ালীর কারণে সুপারী গাছের ফল ঝরে পড়েছে। তাই অনেকরেই গাছে তেমন সুপারী ধরে নাই। ফলন কম হওয়ায় সুপারীর দাম বেড়েছে। 
বালিকা বিদ্যালয় মোড়ের সুপারী ব্যবসায়ী জুলু জানায় ভারত থেকে সুপারী আমদানি না হওয়ায় দেশের বাজারে সুপারির দাম বেড়েছে। তকিপল হাটের
পাইকার রমজান আলী জানান, কাউনিয়ার সুপারি প্রতি মৌসুমে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় রফতানি হয়। এবছর তাদের ভাল ব্যবসা হচ্ছে। অনেকে বেশী দামে পরে বিক্রির জন্য সুপারি সংরক্ষন করে রাখে। 
স্থানীয় কবিরাজ জানান, সুপারির অনেক গুণাগুণ রয়েছে, সুপারিতে রয়েছে শক্তি যোগানোর ক্ষমতা। মুখের ঘা, কৃমি ও বমি ভাব দূর করে, দাঁতে ব্যথা কমায়, মলদ্বারের প্রদাহ দূর করে। 
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনজানান, বর্ষাকালে বীজ পুঁতে সুপারির চারা তৈরি করা হয়। বণিক সমবায় সমিতির পরিচালক শাহজাহান মন্ডল জানান প্রতিটি বাড়ীর উঠানে, আনাচে- কানাচে, রাস্তার ধারে ব্যাপক ভাবে সুপারী বাগান গড়ে তুলতে পারলে বদলে দিতে পারে কাউনিয়ার সুপারী কৃষি অর্থনীতি। সুপারি গাছ লাগতে তেমন জমির প্রয়োজন হয়না, গাছের চারা সহজ লভ্য, দামেও কম।

ক্ষেতের আইলে লাগানো হলেও জমিতে ছায়া পরে না। প্রকৃতির আর্শিবাদেই সুপারীর ফলন। একবার রোপণ করলে যুগযুগ ধরে ফলন পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অফিসার তানিয়া আকতার জানান উপজেলায় সুপারী চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মৌসুমে চাষিরা ভাল দাম পেয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত