কাউনিয়ায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা চাষিদের
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৮ | আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৩৬
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা জনান, সরিষা ঔষুধি গুণের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ বলে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফলে কার্ডিওভাসকুলার তথা হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, সরিষার তেলে উপস্থিত গুলোকোসুনোলেট এবং মিরোসিনেস নামে দুটি উপাদান শরীরে ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে এবং এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কোলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। সরিষার তেলের অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি ব্যকটেরিয়া ও ছত্রাকের ক্ষতিকারক সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সরিষার তেলে থাকা ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাটিঅ্যাসিড এবং ভিটামিন-ই শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান সরবরাহ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সরিষার তেল আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। একসময় গ্রামবাংলার একমাত্র ভোজ্যতেল ছিল সরিষা। চলতি মৌসুমে রংপুরের কাউনিয়ায় সরিষার বাম্পার ফলন ও দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে উপজলার বিভিন্ন গ্রামে মাঠ থেকে সরিষা তুলে মাড়াইয়ের কাজ পুরো দমে শুরু হবে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কৃষক জমি থেকে সরিষা কাটা মারাইড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। উপজলা কৃষি বিভাগ বলছে, স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় এবং দেশে তেলের চাহিদা পুরনে বেশি জমিতে সরিষার চাষে কৃষকদের আগ্রহী করা হয়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে সরিষার বেচাকেনা শুরু হবে। নিজপাড়া গ্রামের সরিষা চাষি গোলাম মোস্তফা জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার তার ফসল জমিতে এখনও ভালই আছে। তিনি বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ার আশা করছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে ২৬২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ১৭৮০ হেক্টর জমিতে। স্থান ভেদে এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সর্বোচ্চ খরচ হয় ৫হাজার টাকা। হেক্টরে ১.৫৮ মেঃটন সরিষা উৎপাদন হবে। মণ প্রতি সরিষা ৩হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রির আশা তাদের। সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সরকার ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ন হতে চায়। ইতোমধ্যে মানুষের মধ্যে সরিষার তেল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কৃষি কর্মকর্তা বৃষিবিদ তানিয়া আকতার জানান, চলতি মৌসুমে সরিষা চাষ বৃদ্ধির জন্য সরকারী ভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। আশা করছি ২৮০৯ মেঃটন সরিষা উৎপাদন হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত