শারীরিক প্রতিবন্ধীকতাকে দুরে ঠেলে
কাউনিয়ায় পা দিয়ে লিখে কলি রানী এসএসসিতে উত্তীর্ণ
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১৯:২৫ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১২
ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবল থাকলে যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করেছে কলি রানী। সে এবার কাউনিয়া বালিকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে জিপিএ ৩.৫০ অর্জন করে। কলি রানী উপজেলার গদাই গ্রামের রুপালী রানীর মেয়ে। জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী কলি রানী, তবুও থেমে যায়নি লেখাপড়া। যখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে তখন তার পিতা মনোরঞ্জন রায় পরলোকগমন করেন। কলি রানীর ৩ ভাই ৩ বোন। সে সবার ছোট। পরিবারের সহযোগিতা আর প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে তার স্বপ্ন পূরণের আশায়। শুধু তাই নয় সে ভাল গানও গাইতে পারে। গানগেয়ে একাধীক সম্মাননা স্মারক পেয়েছে সে। পা দিয়ে চালাতে পারেন কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন, কলি রানীর ইচ্ছে পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হয়ে মানুষের সেবা করতে। দেখিয়ে দিতে চায় ইচ্ছের কাছে বাধা নয় শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। পঞ্চম শ্রেণীতে সে পা দিয়ে লেখে এ গ্রেড পেয়েছিলেন। কলি রানীর মা রুপালি রানীর জানায় জন্ম থেকেই তার মেয়ের হাতের আঙ্গুল নেই, হাত বাকা ও ছোট তাই হাত দিয়ে কলম ধরতে পারে না। মেয়ের অদম্য ইচ্ছা শক্তি দৃঢ় মনোবল দিয়ে ডান পা দিয়ে আস্তে আস্তে লেখা শুরু করে, ধীরে ধীরে লিখতে লিখতে দ্রুত গতিতে লেখার কৌশল আয়ত্ব করে। তিনি তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চেয়েছেন। কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক জনানা পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে অদম্য শিক্ষার্থী কলি রানী। কাউনিয়ায় মহিলা কলেজের শিক্ষক সাইফুর রহমান জানান, কলি রানী একাদশ শ্রেণিতে মহিলা কলেজে ভর্তি হলে কলেজের সকল বেতন মওকুফ করে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হবে। কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, কলি রানী কে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আটকে রাখতে পারেনি। আমরা চাই তার অদম্য অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়। সে যেন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এজন্য উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত