আগামীতে সোনালী স্বপ্নের হাতছানি
কাউনিয়ায় পরীক্ষামূলক আপেল চাষে সফল চাষী হামিদা খাতুন
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ১৭:২৮ | আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:০১
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নে সাহাবাজ গ্রামের সহকারী অধ্যাপক আবু রেজার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফরিদা খাতুন শক থেকে প্রথম পরী¶ামূলক আপেল চাষ করে সফল হয়েছেন। চারটি জাতের ৪টি চারা দিয়ে শুরু করেন পরীক্ষামূলক আপেলের চাষ। তাতেই সফলতা ধরা দিয়েছে তার হাতে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শেষে বাড়িতেই শুরু করেন আপেল চাষ। প্রায় দুই বছর আগে বাগানে রোপণ করা ৪টি গাছ। প্রথমবার ফুল ও ফল ধরলেও একটি গাছে ২টি ফল আছে বাকি গুলো ঝরে গেছে।
ভবিষ্যতে বাগান বড় করে বাণিজ্যিক ভাবে আপেল চাষের স্বপ্ন দেখছেন হামিদা। আপেল ধরার খবর শুনে অনেকে ছুটে আসছেন বাগানে একনজর গাছের আপেল দেখতে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে উপজেলায় এটিই প্রথম আপেলের বাগান।
সরেজমিন আপেল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী অধ্যাপক আবু রেজা এবং তার স্ত্রী হামিদা খাতুন মিলে বাড়ির পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে ৪টি জাতের ৪টি আপেলসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করেছেন তারা। তাদের বাগানে একটি গাছে ২টি আপেল আছে। বাকি ৩টি গাছে ফুল ধরেছিল কিন্তু ফল হয় নি। আপেলের পাশাপাশি বাগানে মালটা, বেদানা, লিচু, বড়াই, আম, আলুবোখারা চাষ করেছেন। আপেল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার স্বামী আবু রেজার সহয়োগিতায় গত প্রায় দুই বছার আগে উল্লাপাড়া থেকে ১৪০০ টাকা দরে ৪টি জাতের হরিমন শর্মা ৯৯ (ভারত), আন্না (ইজরাইল), সুইট টপিক (অষ্ট্রেলি), গোল্ডেন ডোরমেড (যুক্তরাষ্ট্র) ৪টি চারা সংগ্রহ করেন। এরপর গর্ত করে কম্পোষ্ট ও জৈব সার মাটির সাথে কিছু রাসায়নিক সার মিশিয়ে চারা গুলো রোপণ করেন। চলতি মৌসুমে চারটিতেই ফুল এসছিল কিন্তু এবার গোল্ডেন ডোরমেড জাতের গাছটিতে ২টি ফল ধরেছে। এখন তার গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে সুস্বাদু ২টি আপেল ঝুলছে। আপেল গাছ আলো, বাতাস পূর্ণ এবং উঁচু জমিতে ভালো হয়। বেলে দো-আঁশ মাটি আদর্শ হলেও অন্য মাটিতে ও রোপণ করা যায়। তবে আপেল গাছ কোনোভাবেই জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন বলেন, সাধারণত আপেল শীত প্রধান দেশে চাষ করা হয়। তবে আমাদের দেশে এখন আপেল চাষ করা সম্ভব। হামিদা খাতুনের লাগানো জাতের চারাগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। কাউনিয়ায় এটিই প্রথম আপেলের বাগান। এখানে দুই বছর বয়সে গাছে ফুল ও ফল এসেছে। আশা করা যায় গাছগুলোর পরিণত বয়সে ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে। আমদানি নির্ভরতা কমাতে আপেলের বাগান এ অঞ্চলে বেশি বেশি করা গেলে, একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি বিদেশি ফলের চাহিদাও মিটবে। আসবে অর্থনৈতিক উন্নতি। কাউনিয়ায় হামিদা খাতুন আপলে চাষ করে সবাই কে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত