পানা টেনে মাছ মারা

কাউনিয়ায় দেশী প্রজাতির সুসাদু মাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:৩০ |  আপডেট  : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৫

 শীতের আগমনে নদী নালা খাল বিলে পানি কমে গেলে এলাকার প্রতিটি গ্রামে দল বেধে কচুরি পানা টেনে মাছ মারা উৎসব শুরু হয়। এছারাও গ্রামে গ্রামে কিছু মৎস্য শিকারী খালে বিলে কচুরী পানা টেনে মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তেমনি কাউনিয়ায় উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের বল্লভবিষ্ণু ও ভুতছাড়া গ্রামে মানস নদীতে পানি কমে যাওয়ায় মাছ মেরে জীবন নির্বাহ কারী কয়েকজন কচুরি পানা টেনে মাছ মারতে দেখা যায়। 

সরেজমিনে কচুরিপানা টেনে মাছ মারা হাসেন আলী, সোহরাব আলী, সায়েদ আলী ও রফিকুলের সাথে কথা বললে, তারা জানায় একটা সময় ছিল যখন নদী নালা খাল বিলে প্রচুর সুসাদু দেশী মাছ পাওয়া যেত, কিন্তু কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে অধিক হারে কিটনাশক, অধিক হারে রাসায়নিক সার, চায়না দুয়ারী রিং ও কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহারের ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন নষ্ট হয়ে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সাথে দেশের জলাশয় গুলোকে আবদ্ধ করে মাছ চাষ করায় এখন আর দেশী মাছ পাওয়া যায় না। দেশী মাছ আহরন করে আমরা যারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করতাম তাদের অনেকেই এখন এই পেশা ছেরে অন্য পেশায় চলে গেছে। আগে যেকোন খাল বিলে পানা টানলেই, শিং, মাগুর, কই, গরাই, শোল, খরিকাটি, ভেদা সহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। এখন সারাদিন পানা টেনেও ১কেজি মাছ পাওয়া যায় না। তারপর ও অন্য কোন উপায় না থাকায় এই পেশা ধরে রেখেছি। কোন কোন দিন মাছ মেরে ৩ থেকে ৪শ টাকার মাছ পাই, আবার কোন দিন পাই না। সরকারকে এই পেশার মানুষ গুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে ও দেশীয় মাছ রক্ষায় নদী নালা খাল বিল গুলোকে উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, কোন ভাবেই পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ এবং রিং ও কারেন্ট জাল ব্যবহার বন্ধ করার ব্যবস্থা করা। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার জানান, চায়না দুয়ারী রিং জাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহার রোধে ভ্রম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, জনগণ সচেতন না হলে দেশীয় মাছ রক্ষা করা হয়তো সম্ভব হবে না। দেশী মাছ রক্ষায় জনগণকেই সচেতন হতে হবে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত