পরিবেশ বান্ধব ঘোড়া গাড়ী

কাউনিয়ায় কর্ম সংস্থানের নবদিগন্তের সূচনা করেছে

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:১১ |  আপডেট  : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩২

চরাঞ্চলের উন্নয়ন বঞ্চিত উপজেলা হিসেবে পরিচিত কাউনিয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল গুলোতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরের জাহাজ হিসেবে পরিচিত ঘোড়া গাড়ি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। চরাঞ্চলে ঘোড়া গাড়ির ব্যবহারের ফলে কর্র্র্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলা সদররের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত প্রাননাথচর, চর নাজিরদহ, গোপিডাঙ্গা, চর গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, চর আজমখাঁসহ বিভিন্ন চরা ল ঘুরে দেখাগেছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি। বালু আর মরা তিস্তার শাখা নদীর রাস্তাসহ কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাক যেতে পারে না সেই সকল রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়া গাড়ির কদর বেড়েছে। উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, ডাল এসব অর্থকারী ফসল চরা লেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে বাজারে নিয়ে যেতে না পারার কারনে কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই বিক্রয় করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করতে পাচ্ছে। কাউনিয়ায় এ সব চরাঞ্চলে প্রায় ৪শতাধিক ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। কাউনিয়ায় থানা রোডে কথা হয় হারাগাছের চর নাজির দহ গ্রামের ঘোড়াগাড়ি চালক আঃ খালেকের সাথে, সে জানায় এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো পরিবার পরিজন নিয়ে। বাড়িতে তার স্ত্রীর পরামর্শে একটি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে লালমনিরহাট জেলার  দুর্গাপুর হাট থেকে একটি ঘোড়া কিনে আনে ও ৭হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি তৈরী করে। শুরু হয় তার পথ চলা। এর পর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। বর্তমানে তার প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শ টাকা আয় হয়। ঘোড়া গাড়ির চাকা তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে সে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে। একই কথা জানালেন টেপামধুপুর চরগনাই গ্রামের বেশ কয়েকজন ঘোড়ার গাড়ি চালক। 

ঘোড়া গাড়ির ব্যাপারে বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানআনছার আলী, টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম, শহীদবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ হান্নান জানান ঘোড়া গাড়ির ফলে পরিবহনের সুবিধাসহ ব্যাপক কর্মস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আগে এ উপজেলায় ঘোড়া দেখা যেতনা, এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়া গাড়ি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্র্তা শাহানাজ পারভীন জানান জানান এই বাহনটি পরিবেশ বান্ধব। গোড়া গাড়ির ফলে চরা লের কৃষক তাদের উৎপদিত ফসল বাজারে স্বল্প ব্যায়ে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করতে পাচ্ছে। 

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত