কাউনিয়ায় অবৈধ ট্রলি-ট্রাক্টরের অবাধ বিচরণ - প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, নিরব প্রশাসন
প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৫ | আপডেট : ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৫
কাউনিয়ায় ১টি পৌরসভা সহ ৬টি ইউনিয়নে ইট, বালু, মাটি বহনকারী অবৈধ ট্রলি ও ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়ে চললেও, কর্তৃপক্ষের নজরে আসছে না। এদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অকালে ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। আবার অনেকই সারা জীবনের জন্য বরণ করতে হচ্ছে পঙ্গুত্ব। এগুলোর বিকট শব্দে ঘটছে শব্দ দূষণ।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রশাসনের চোখের সামনে অবৈধ এই যানবাহন অবাধে চলাচল করলেও অদৃশ্য কারণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। ফলে পথচারীসহ জনসাধারণকে সার্বক্ষণিক আতংকের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে।
কৃষিজমি চাষের জন্য ট্রাক্টর খুবই জনপ্রিয় কৃষকের কাছে। কৃষি উন্নয়নে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য সরকার ট্রাক্টর আমদানির অনুমতি দেয়। জমি চাষের জন্য আমদানিকৃত এই ট্রাক্টর ট্রলি নানা পরিবহনে রূপান্তিরত হয়ে মানুষ তথা রাস্তা-ঘাটের সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। জমি চাষ বাদা দিয়ে এসব এই ট্রাক্টর ট্রলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গ্রামাঞ্চল, শহর ও বাজার কেন্দ্রিক সড়কগুলোতে। এই বাহনে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় অদক্ষ শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত বছর সড়ক মহাসড়কে ছোট বড় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশই প্রায় ট্রাক্টর ট্রলির কারনে। এতে করে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন শতাধিক মানুষ।
এছারা গ্রামের কাচা পাকা রাস্তা গুলোর অধিকাংশ নষ্ট হচ্ছে এসব বেপরোয়া গতির ট্রাক্টরের জন্য। এগুলোর বিকট শব্দে শহরের পাশাপাশি গ্রামগুলোতে ব্যাপকভাবে বায়ু ও শব্দ দূষণ দেখা দিয়েছে। এদের বিশাল আকৃতির চাকায় পাকা রাস্তার পেভমেন্ট ভেঙ্গে যাচ্ছে। চুর্নবিচুর্ন হচ্ছে ইটের রাস্তা। গ্রামের মেঠো পথগুলোর মাটি আলগা হয়ে জমিতে মিশে যাচ্ছে। বিলীন হতে শুরু করেছে মেঠো পথগুলো। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাঘাট বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক দিক। এসব ট্রাক্টরের ক্রেতা হলেন ইটভাটার মালিক, মাটি ও বালু ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকসহ সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ীরা।
কাউনিয়ায় অবৈধ এই ট্রলি-ট্রাক্টরের সংখ্যা কত, সে বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কারও কাছে কোনো তথ্য নেই। ট্রলি-ট্রাক্টরের ভয়ে রাস্তা-ঘাটে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় চলাচল করছে শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ। সড়কে এই অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক বলেন, ট্রাক্টরে সড়ক-মহাসড়কে চলাচল কিংবা পণ্য সামগ্রী বহনের অনুমতি নেই। তারপরেও অবৈধভাবে এসব যান সড়কে চলাচল করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত