'কাঁপুনি দিয়ে নাচ' ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের লক্ষণ

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ | আপডেট : ৩ মে ২০২৫, ২০:২৫

কোভিড ১৯ বা করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই আরও একটি রহস্যময় রোগ এসে হাজির হয়েছে মানুষের সামনে। বর্তমান সময়ের আলোচিত এই রোগের নাম ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা (Dinga Dinga)’।
‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে। উগান্ডার স্থানীয় ভাষায় ডিঙ্গা ডিঙ্গা শব্দের অর্থ হচ্ছে নাচের মতো কাঁপুনি। ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগে আক্রান্ত রোগীদের শরীর অনিয়ন্ত্রিতভাবে ক্রমাগত কাঁপুনি দিতে থাকে, দেখে যেন মনে হয় আক্রান্ত ব্যক্তি নাচছেন। সেজন্যই এই রোগকে স্থানীয় ভাষায় ডিঙ্গা ডিঙ্গা বলা হয়। সম্প্রতি আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডার বুন্দিবুগিও (Bundibugyo) জেলায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রেই ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রহস্যজনক এই রোগে উগান্ডার বুন্দিবুগিও জেলায় ৩০০ রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে আশার কথা এই যে, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। বুন্দিবুগিও জেলার বাইরে এই রোগে আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, সর্দি, নাক বন্ধ এবং শরীরে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, করোনাভাইরাস, ম্যালেরিয়া, হামের মতো ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগেও একই লক্ষণ দেখা যায়।
উল্লেখ্য, ১৫১৮ সালে ফ্রান্সের স্টার্সবার্গ (Strasbourg)-এ একটি নতুন রোগের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল যাকে ‘ডান্সিং প্লেগ (Dancing plague of 1518)’ বলা হতো। ডান্সিং প্লেগের উপসর্গের সাথে ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের উপসর্গের মিল রয়েছে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগে আক্রান্ত রোগীদের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অনিয়ন্ত্রিত ‘নাচের মতো ঝাঁকুনি’। প্রচণ্ড জ্বরসহ রোগীদের শরীর এতটাই দুর্বল হয় যেন কখনো কখনো পক্ষাঘাতগ্রস্ত মনে হয়।
ডিঙ্গা ডিঙ্গা ভাইরাসের ধরন এখনো পর্যন্ত একটি রহস্য। যদিও বিশেষজ্ঞরা এটা নিয়ে ক্রমাগত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবুও রোগের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন। তবে অনেকেই একে ফ্রান্সের স্টার্সবার্গের ‘ড্যান্সিং প্লেগ’-এর সাথে তুলনা করছেন।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক বা চিকিৎসা নেই। ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের ভাইরাস সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত গবেষণাগারে বিশদ গবেষণা না হলেও উগান্ডার জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, তারা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করছেন।
এই রোগে আক্রান্ত একজন রোগীর সুস্থ হতে প্রায় এক সপ্তাহের মতো সময় লাগছে। তবে যেকোনো ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মতোই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এর প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে। এ রোগের উৎস এখন পর্যন্ত উন্মোচিত না হলেও স্বাস্থ্য কর্মীগণ সম্মিলিতভাবে একে প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত