কলার বাম্পার ফলন, দাম পেয়ে কাউনিয়ায় কৃষকের মুখে হাসি
প্রকাশ: ৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৯ | আপডেট : ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৪৯
‘কলা গেড়ে না কেটে পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’, করির এ উক্তিকে মাথায় রেখে কাউনিয়ায় কলা চাষ করে অভাবনিয় সফলতা পেয়েছে প্রায় শতাধিক চাষি। খোপাতি গ্রাম সহ বিভিন্ন গ্রামে যখন কোন ফসল ভাল হচ্ছিল না তখন সাহস করে কয়েকজন চাষি কলা চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়ে এলাকার মানুষ কে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। কাউনিয়ায় উৎপাদিত কলা রফতানি হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।
কলা হচ্ছে গ্রাম বাংলার বারোমাসি ফল। ছোট বড় সব বয়সের প্রিয় ফল কলা। রমজান মাসে মুড়ি, বুট আর বুন্দিয়ার সাথে কলা না থাকলে যেন ইফতারে অপূর্ণতা থেকে যায়। এক সময় প্রায় বাড়ীতে মালভোগ, মনুয়া, চিনি চাম্পা, আটিয়া সহ বিভিন্ন জাতের কলার গাছ লাগাতো সেগুলো এখন কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়ার পথে। বর্তমানে অধিক ফলন আর লাভের আশায় সেই জায়গা দখল করে নিয়ে সাগর কলা। কলা বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার খোপাতিসহ বেশ কিছু গ্রামে। বেশী লাভজনক হওয়ায় এখন উপজেলার অনেক কৃষক অন্যান্য ফসলের চাষ বাদ দিয়ে কলা চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে। সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার হলদিবাড়ী, খোপাতী, শিবু কুটিরপাড়, শিবু লিচু বাগান, পুর্বচান্দ ঘাট, হরিচরনলস্কর, প্রাননাথচর, চর নাজিরদহ, চান্দ ঘাটে বিতৃর্ণ মাঠ জুড়ে শুধু কলা আর কলার বাগান। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশী কলা চাষ হয় শিবু কুঠির পাড় ও খোপাতি গ্রামে তাই এলাকার মানুষ কলা গ্রাম নামেই চিনে। খোপাতী গ্রামের কলাচাষি শহিদুল ১৪শ, রফিকুল ৬শ, ফজলু ৫শ, খায়রুল ১১শ, শফিকুল ২১শ, আবেদ ৪শ, নজরুল ৫শ কলা চাষ করে তারাও বেশ লাভবান হয়েছে। হরিচরনলস্কর গ্রামের কলা চাষী মানিক সরকার ও শিবু কুটিরপাড় গ্রামের নুর ইসলাম, মনু মিয়া সহ বিভিন্ন কলা চাষীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, তাদের গ্রামের প্রায় ৭০ ভাগ কৃষকেরই কলা বাগান রয়েছে। কৃষকরা জানায় এক একর জমিতে ধান চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আর যে ধান উৎপাদন হয় তা বিক্রয় করে লাভ হয় মাত্র ১০/১২ হাজার টাকা। আর এক একর জমিতে কলা চাষ করতে খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আর উৎপাদিত কলা বিক্রয় করে লাভ হয় গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। রমজান মাসে কলার চাহিদা বেশী থাকে, এ সময় যদি কলা বিক্রয় করা যায় তবে সবচেয়ে বেশী লাভ হয়। কলা চাষীরা জানায় জমিতে ধান আবাদ করতে গেলে অনেক ঝামেলা। তার চেয়ে কলা বাগান করলে এর সাথে বাড়তি সাথী ফসল যেমন কুমড়া, আঁদা, পিয়াজ, রসুন, হলুদসহ বিভিন্ন রকমের শাক সব্জী চাষ করেও বার্তি উপার্জন করা সম্ভব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আকতার জানান বর্তমানে কলা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষক কলাচাষে ঝুকে পড়েছে। কলাচাষিদের সবসময় রোগবালাইসহ বিভিন্ন সমস্যায় পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে। উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হবে ২১৯৫ মেঃটন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত