এবার নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ গেলো ১১ জনের
প্রকাশ: ৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৫২ | আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৫
পঞ্চম ধাপে বুধবার (৫ জানুয়ারি) দেশের ৭০৮ ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। সেই শঙ্কাই সত্যি হলো। অন্যান্য ধাপের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি হামলা, গোলাগুলি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো সহিংসতায় ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
ভোটের দিন বগুড়ায় পাঁচজন, চাঁদপুরে দুজন, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ ও নওগাঁয় একজন করে মারা গেছেন। এছাড়া ঝিনাইদহে গত শুক্রবার নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। এছাড়া নির্বাচনে জাল ভোট, নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোটদানে বাধ্য করা, কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বগুড়া: গাবতলীর বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের নির্বাচন শেষে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে চার জন নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিন জন। বুধবার (০৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ইউনিয়নের কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা গ্রামের খোকন মন্ডলের স্ত্রী নারী ইউপি সদস্য প্রার্থীর এজেন্ট কুলসুম আকতার (৩৫), একই গ্রামের মৃত ছিফাতুল্লাহর ছেলে আবদুর রশিদ (৬০), মকবুল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫) ও মৃত ছহির উদ্দিন আকন্দের ছেলে খোরশেদ আলী (৭০)। গুলিবিদ্ধরা হলেন মালিয়ানডাঙ্গা গ্রামের সাবেক মেম্বার আবদুর রশিদ, একই এলাকার মেহেদী ও রাসিব।
এছাড়া একই উপজেলায় দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে জাকির হোসেন (৩২) নামে আরও একজন নিহত হয়েছেন। রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের জাইগুলি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। জাকির জাইগুলি উত্তরপাড়া মৃত লয়া মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রঙমিস্ত্রি। মেম্বার প্রার্থী সাইদুল ইসলামের (টিউবওয়েল প্রতীক) সমর্থক হিসেবে কাজ করছিলেন।
চাঁদপুর: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় জেলায় দুজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন কচুয়ায় ও অন্যজন হাইমচরে নিহত হন। বুধবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় ছুরিকাঘাতে প্রাণহানি ঘটে। জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কচুয়ার সাচার এলাকায় নিহত যুবকের নাম শরীফ হোসেন। তার বাবার নাম শহীদ উল্লাহ। তিনি হাতিরবন্ধ গ্রামের বাসিন্দা। দুই সদস্য প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দিলে ছুরিকাঘাতে আহত হন শরীফ। হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান। অন্যদিকে হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাহেরচর এলাকায় বিকাল ৩টায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে আরও একজন নিহত হন।
নওগাঁ: পত্নীতলা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পুলিশ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোষনগর ইউপির কমলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে স্থানীয়রা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়।
চট্টগ্রাম: আনোয়ারা উপজেলার চাতরি ইউনিয়নে সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে চাতরী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সংঘর্ষে ওই ব্যক্তি নিহত হন। নিহত ব্যক্তির নাম ওমকার দত্ত (৩৫)। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আনোয়ার খালেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মানিকগঞ্জ: জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুরে ওই ওয়ার্ডের বাচামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এ সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ভোটকেন্দ্রের পাশে দাঁড়ানো স্থানীয় চরডালুটিয়া গ্রামের মো. মাহাতাব আলীর স্ত্রী সুমেলা খাতুন (৫০) ঘটনাটি দেখে স্ট্রোক করেন। পরে তাকে বাড়িতে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় আবু তাহের (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকালে উপজেলার জুম্মাবাড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুম্মাবাড়ি আদর্শ কলেজ ভোট কেন্দ্রের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। আবু তাহের ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। তিনি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আইজল মিয়ার (টিউবওয়েল) সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত