কাউনিয়ায় জনদুর্ভোগে কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক

উন্নয়নের মহাসড়কে পাকা সেতুর দুই পাড়ে বাঁশের সাঁকো 

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:২৮ |  আপডেট  : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩৮

কাউনিয়ায় উন্নয়নের মহাসড়কে পাকা সেতু আছে সড়ক নাই। সেতুর দুই পাড়ে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে যাতায়ত চলছে। প্রায় ৫বছর ধরে জনদুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ, কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক। প্রতি বছর বন্যায় একই দৃশ্য তৈরী হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছে। মন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার সকলের কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোন ফল হচ্ছে না। 

সরেজমিনে বালাপাড়া ইউপির গোপিডাঙ্গা মৌলভি বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে বর্তমানে ঝুঁকি পূর্ন পাকা সেতুটি দুই পার্শে কোন রাস্তা নেই। বর্তমানে পাকা সেতুটির একপাশ হেলে গিয়ে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাবাসী সেতুর দুই পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। জানাগেছে ২০১৪ সালে ইউএসএআইডি ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে, কেয়ার বাংলাদেশ এর সহযোগিতায়, এলজিইডি রংপুর এর বাস্তবায়নে ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১শত ৮৩ টাকা ব্যয়ে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের জুন মাসে সেতুটি উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। সেতুটি নির্মাণের পর দুই বছর ওই এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহন এবং যাতায়াত উন্নত হয়। কিন্তু প্রতিবছর বন্যায় তিস্তার পানির তোড়ে সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও সেতুটির সংযোগ সড়ক মেরামত না করায় সেখানে পথচারী এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আবারও শুরু হয় নৌকায় চলা চল। ১০ গ্রামের মানুষের আর কোনো কাজে আসছে না পাকা সেতুটি। সংযোগ সড়কের সংস্কার না করায় চরা লের ১০ গ্রামের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পাকা সেতুর দুই পাড়ে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে দিলেও সেটিরও এখন বেহাল অবস্থা। 

স্থানীয় মোহাম্মদ আলী জানান সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও জনপ্রতিনিধিরা কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছে না। ছাত্র নাবিল জানায় সেতুরটির দুই পার্শের রাস্তা ভেঙ্গে চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও কেউ আমাদের চরের মানুষের খবর রাখে না। কৃষক আলিম জানায় দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও সেতুটির সংযোগ সড়ক জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন থেকে মেরামত না করায় বাধ্য হয়ে এলাকার মানুষ নিজ উদ্যোগে বাঁশ সংগ্রহ করে পারাপারের জন্য পাকা সেতুর সাথে বাাঁশের সাঁকো তৈরী করে পারাপার হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান গত বছর মাটি কেটে ভরাট করেছি এবার আবার বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। নড়বরে পাকা সেতুটি ভেঙ্গেফেলে নতুন সেতু নির্মানের জন্য প্রকৌশল দপ্তরে ৪বার আবেদন করেও কোন কাজ হচ্ছে না। 

উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, সেতুটি নতুন করে নির্মানের জন্য প্রস্তবনা পাঠিয়েছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না। নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা তারিন জানান বিষয়টি সরেজমিনে দেখে মন্ত্রী মহদয় এর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকাবাসী আক্ষেপ করে বলেন, উন্নয়নের মহা সড়কে সেতু আছে সড়ক নাই, মন্ত্রী এবং আমলারা দেখে না তাই। বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে ১০ গ্রামের মানুষের দাবী সেতুটি নতুন করে তৈরী করে চরের মানুষের যোগাযোগ সচল করার। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত