উন্নয়নকানাদের চোখের চিকিৎসা করার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২২, ২০:৪২ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯
যারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না তাদের চোখের চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের চোখে কোনো উন্নয়নই নাকি দেশে হয় নাই। এখন বলতে হয় যে, আমরা তো একটা আই ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। যারা বক্তৃতা দেয় উন্নয়ন হয় নাই, চোখে দেখে না, আমার মনে হয় তাদের চোখ পরীক্ষা করা দরকার। তাহলে হয়তো দেখতে পাবে যে, উন্নয়ন হয়েছে কিনা। ’
রোববার (২৭ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় (ভার্চ্যুয়াল) তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের চোখে পড়ে না যে শতভাগ বিদ্যুৎ, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ তো বিদ্যুৎ ছাড়া চলতে পারে না। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ তারা ব্যবহার করছে। এটা উন্নতি না?’
‘আজকে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র—এগুলি চোখে পড়ে না। এগুলো উন্নয়নের লক্ষণ না। আজকে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে—এটা উন্নয়ন, তাদের চোখে পড়ে না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, এটা তাদের চোখে উন্নয়ন না। ’
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি অনেকে আছে দেশে কোনো উন্নতিই দেখে না। তাদের যদি চোখ খারাপ থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কেন দেখে না সেটা হচ্ছে দেখার ইচ্ছে নাই তাই দেখে না। কিন্তু আমাদের উন্নয়নের যে কর্মসূচি সুপরিকল্পিতভাবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি, আমাদের ঘোষণাপত্রে আমরা ঘোষণা দিয়েছি। নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আমরা বলেছি, আমরা একে একে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ’
গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’৯৬ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প নিয়েছিলাম, খালেদা জিয়া এসে সেটাকে গলা টিপে মেরে ফেলেছিল। যা হোক পরবর্তীতে সেটাকে আমরা আমার বাড়ি আমার খামার নাম দিয়ে গ্রামের কোনো মানুষের ঘরে যেন কোনো অভাব না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ’
তিনি বলেন, ‘মানুষকে আর ঋণের বোঝা টানতে হবে না। বরং তারা নিজেরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে এবং তাদের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে এই প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসে বিরাট সক্ষমতা আমরা অর্জন করছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাটি ও মানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। ’
অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া বিএনপি গণতন্ত্রে ছবক দিচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) মুখে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। সেটাই বড় কথা। যাদের জন্ম হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। ’
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব—সেই স্লোগান তো আওয়ামী লীগের, আমরা দিয়েছি। জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য স্লোগান দিয়েই আমরা সংগ্রাম করে, আজকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি। যে গণতন্ত্র ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল, জিয়ার পকেটে ছিল বা এরশাদের পকেটে ছিল এবং খালেদা জিয়ার আঁচলে ছিল। সেটাকে আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজকে জনগণের ক্ষমতায়ন আমরা করেছি। সেখানে যদি বিএনপির নেতারা এখন গণতন্ত্র না দেখে, উন্নয়ন না দেখে তাহলে তো বলার আর কিছু থাকে না। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান।
গণভবন থেকে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত