ইসকনের বাংলাদেশি পুরোহিতকে খুন করেছে বিএসএফ: অভিযোগ মমতার
প্রকাশ: ৮ মার্চ ২০২৪, ১১:০৮ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮
বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে এক বাংলাদেশি হিন্দু পুরোহিতকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে বুধবার বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে একটি অভিযোগও জমা পড়েছে। বৃহস্পতিবার এই বিষয়টি জনসমক্ষে আনেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
মমতার বক্তব্য যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে বিএসএফ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারত, মামলা করতে পারত, কিন্তু তা না করে কেন খুন করা হলো? বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে কেন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক বিশাল পদযাত্রা শেষে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং এর সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সন্দেশখালির ঘটনায় বিজেপিকে নিশানা করে মমতার অভিযোগ 'বিজেপি ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে।' বিজেপির বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে অপব্যবহারের অভিযোগ তোলেন মমতা।
এসময় বিএসএফকে নিশানা করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে আমাদের পুলিশের কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। ইসকনের একজন পুরোহিত, তিনি শিক্ষিত, তিনি নাকি বাংলাদেশি ছিলেন। বিএসএফ নাকি তাকে অত্যাচার করে মেরে দিয়েছে। এটা কি একটা খারাপ উদাহরণ নয়?'
মমতা ফের বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে আমাদের কাছে একটা অভিযোগ এসেছে, যে তোমাদের ওখানে আমাদের লোককে খুন করা হয়েছে। আমাদের কেউ অন্যায় না করলেও ইডি যদি অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলায় (PMLA) গ্রেফতার করে রেখে দেয়, তবে বিএসএফ যদি অন্য দেশের নাগরিকদের খুন করে, তবে তার বিরুদ্ধে কেন গ্রেফতারি হয় না? কেন তার বিরুদ্ধে অ্যাকশান নেওয়া হবে না?'
মমতার অভিমত, 'বিএসএফের যদি মনে হতো, যে এটা বাংলাদেশি, তবে মামলা করতে পারতো বা আইনানুগ ব্যবস্থা নিত। কিন্তু কাউকে মেরে দেওয়ার অধিকার তো তোমার নেই।' যদিও ঠিক কবে ওই ঘটনা ঘটেছে বা সীমান্তের কোন অংশে এই ঘটনা ঘটেছে তা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা যখন মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন তখন সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যটির নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাংসদ মালা রায়, দোলা সেন, সুস্মিতা দেব, সাগরিকা ঘোষ, বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলী ব্যানার্জি, অভিনেত্রী জুন মালিয়াসহ নারীরা। মঞ্চের পিছনের সারিতেই ছিলেন সন্দেশখালির নারীরাও।
বিএসএফকে নিয়ে মমতার অভিযোগ এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিএসএফের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। গ্রামে ঢুকে গ্রামবাসীদের উপর বিএসএফের অত্যাচারের অভিযোগও তুলেছিলেন মমতা।
গত জানুয়ারি মাসে কোচবিহারের সভা থেকে সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের বিরুদ্ধে আলাদা করে পরিচয়পত্র ইস্যু করার অভিযোগ তুলে মমতা সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন 'বিএসএফ যদি পৃথক কোন আইডেন্টিটি কার্ড দেয় তবে তা নেবেন না। ওই পরিচয়পত্র নিলে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র আওতায় পড়ে যেতে হবে বলেও জানিয়েছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএসএফের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয় বিএসএফ এমন কোন পরিচয়পত্র ইস্যু করে না। বিএসএফ হলো ভারত-বাংলাদেশ এবং ভারত সীমান্তে এলাকার সুরক্ষা বাহিনী। তাদের সাথে এনআরসির কোন সম্পর্ক নেই।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত