আসিয়ানভুক্ত দেশে জলবায়ু রক্ষায় সহায়তার অঙ্গীকার হুয়াওয়ের
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ২১:১৪ | আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৩৪
ডিজিটাল পাওয়ার উদ্ভাবনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও সবুজের বিকাশে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে সহযোগিতা করবে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। গত (১৬ জুলাই) অনলাইনে অনুষ্ঠিত ‘আসিয়ান-চায়না ডিজিটাল ইকোনমি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন ফোরাম ২০২১’ – এ হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট জেফরি লিউ এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত সমস্যা ক্রমান্বয়ে একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হচ্ছে। গত বছর অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বিশ্বজুড়ে লকডাউন থাকার ফলে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পেলেও, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুণরায় চালুর সাথে সাথে এই নিঃসরণ দ্রুতগতিতে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসছে। বর্তমান প্রেক্ষিতে, সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তর এবং টেকসই উন্নয়ন অর্জন বর্তমানে প্রতিটি দেশেরই অন্যতম লক্ষ্য।
জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের ২০টি দেশের মধ্যে ছয়টি দেশ আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্র হওয়ায় এ অঞ্চলে সম্ভাব্য জলবায়ু পরিবর্তনের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে আসিয়ান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন পরিবেশগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, থাইল্যান্ড ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণে শীর্ষে পৌঁছানোর এবং ২০৬৫ সালের মধ্যে নেট শূন্য কার্বন নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
বিভিন্ন শিল্পে শক্তি সংরক্ষণ ও নিঃসরণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে আইসিটি প্রযুক্তি। ধারণা করা হয় যে, আইসিটি প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা যাবে, তা আইসিটি শিল্পের মাধ্যমে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরিত হয় এর চেয়ে দশ গুণ বেশি হবে।
হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট বলেন, “হুয়াওয়ে এর ডিজিটাল পাওয়ার ব্যবসার উন্নয়ন এবং বিভিন্ন শিল্পের জন্য ডিজিটাল পাওয়ার সমাধান প্রদানের লক্ষ্যে পাওয়ার ইলেকট্রনিকস এবং শক্তি সঞ্চয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ফাইভ জি, ক্লাউড এবং অন্যান্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে এর প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে কাজে লাগাচ্ছে।”
নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে, হুয়াওয়ে ১৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ডিজিটাল পাওয়ার সমাধান সরাবরাহ করে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনগণকে সেবা প্রদান করছে। গত বছরের ডিসেম্বর পরযন্ত, এই সমাধানগুলো নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৩২৫ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করেছে এবং মোট ১০ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করেছে। এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে ১৬০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস সম্ভব হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, সিঙ্গাপুরে বিশ্বের বৃহত্তম ভাসমান অফশোর ফটোভোল্টাইক (পিভি) ফার্ম তৈরিতে সৌরবিদ্যুৎ সমাধান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সানসিপ গ্রুপকে সহায়তা করেছে হুয়াওয়ে ফিউশনসোলার সল্যুশন। ১৩,৩১২টি সোলার প্যানেল, ৪০টি ইনভার্টার এবং ৩০,০০০ এরও বেশি ফ্লোটবিশিষ্ট পাঁচ হেক্টরের সমুদ্রভিত্তিক এই সৌরকেন্দ্রটি, প্রতি বছর আনুমানিক ৬,০২২,৫০০ কিলোওয়াট ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করবে, যা দ্বীপের ১২৫০টি চার কক্ষের আবাসন ফ্ল্যাটে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে এবং আনুমানিক ৪২৫৮ টন কার্বন ডাই অক্সাইড হ্রাস করবে।
ময়মনসিংহে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৭৩কে সোলার প্যানেল এবং ৩৩২টি ইনভার্টারের মাধ্যমে হুয়াওয়ে স্মার্ট ফটোভোলটাইক (পিভি) সমাধান ইনস্টল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত হয়েছে এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ প্রকল্পের সর্বোচ্চ সক্ষমতায় আইপি৬৬ উচ্চস্তরের সুরক্ষা এবং অ্যান্টি-পিআইডি প্রযুক্তিসহ হুয়াওয়ে এসইউএন২০০০-১৮৫কেটিএল স্মার্ট পিভি স্ট্রিং ইনভার্টার ব্যবহার করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ৩১৬৮ মেগাওয়াট ইনস্টলেশন সক্ষমতার লক্ষ্য রয়েছে। এ মেগা প্রকল্প সে লক্ষ্য অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এছাড়াও, ৭৩ মেগা ওয়াট পিভি সক্ষমতার এ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে দেশের সর্বমোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদনে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে আসিয়ানের সদস্য।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত