আরজি কর কাণ্ড: অভিযুক্ত সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:২২ |  আপডেট  : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১৭

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আরজি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের বহুল আলোচিত মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার কলকাতার শিয়ালদহের অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস এই সাজা ঘোষণা করেছেন। গত বছর কলকাতার বহুল আলোচিত এই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও চিকিৎসক ধর্মঘট পালন করা হয়েছিল। তবে সোমবার আদালতের রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার চিকিৎসকের পরিবার। রায় ঘোষণার পরপরই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের সদস্যরা বলেন, তারা এই সাজা শুনে ‘‘মর্মাহত’’ হয়েছেন। খুনিকে ফাঁসি দেওয়া হবে বলে তারা আশা করেছিলেন।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার দীর্ঘস্থায়ী সংকটকে তুলে ধরছে কলকাতার এই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা।

রায় ঘোষণার সময় আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস বলেছেন, মামলাটি মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার যোগ্য নয়। কারণ এটি ‘‘সবচেয়ে বিরল মামলাগুলোর মধ্যে বিরল’’ নয়। আদেশে তিনি বলেছেন, সঞ্জয় রায়কে তার জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে।

ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন আদালত। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত বছরের ৯ আগস্ট কলকাতার সরকারি আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। কলকাতায় টানা আন্দোলন করেন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে যোগ দেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।

মামলার একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় হাসপাতালের সিভিক স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। নারী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের একদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বছর স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের নিরাপত্তা কীভাবে জোরদার করা যায় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্সকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ওই সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের একটি বেঞ্চ জানান, এই হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা ‘‘জাতির বিবেককে হতবাক করেছে।’’

হত্যাকাণ্ডের শিকার নারী চিকিৎসকের মা ও বাবা সোমবার আদালতে বিচারকের কাছাকাছি বসেছিলেন। তারা বলেছেন, এই মামলায় তারা অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের সাজা প্রত্যাশা করেছিলেন।

ভুক্তভোগীর বাবা এএফপিকে বলেন, আমরা এই রায়ে হতবাক। এ সময় তার গাল বেয়ে অশ্রু ঝরতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব এবং তদন্ত বন্ধ হতে দেব না... যাই হোক না কেন, আমরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করব।’’

সূত্র: এএফপি।

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত