আমি কৈবর্তের বংশধর

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:১৪ |  আপডেট  : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫

মুজিব রহমান
--------------------


আমি কৈবর্তের বংশধর
(হতে পারি অচ্ছুৎ, ডোম কিংবা হরিজনের)
আমার পূর্বপুরুষের হাতে ছিল লাঙলের ফলা
চোখে ছিল রক্তজবার মতো সূর্য!

আমার পূর্বপুরুষ ছিল শ্রমদাস
হয়তো মজুর, কৃতদাস শোষিত কেউ
আমার পূর্বপুরুষের হাতে ছিল তীর-ধনুক
হৃদয়ে ছিল ফকির-সন্ন্যাসী মজনু শাহ!

তোমরা জঞ্জালের মতো আটকে রাখো মানুষ
অথচ সাদামাটা জীবনে তাদের ছিল উচ্চ চিন্তার বান
অনটনের জীবনে তারা প্রবেশ করতে দেয়নি প্রাচুর্য্য
সভ্যতা বিনির্মাণে জীবনকে তারা বিলাস করেনি।

আমার পূর্বপুরুষ কারো শ্রদ্ধার জন্য লালায়িত ছিল না
তারা সংগ্রাম করেছে ভাল ও সুন্দর হতে
তারা হৃদয় থেকে ঝরিয়েছে ফুল আর সুগন্ধী
তারা প্রকৃতি থেকেই উপভোগ করেছে সৌন্দর্য আর আনন্দ!

আমি অচ্ছুৎ শূদ্র বংশজাত
আমার পূর্বপুরুষের মস্তক নত রাখতে বাধ্য করা হতো
যদিও তাদের বাহুতে ছিল বল আর বুকে ছিল দম
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের আঘাতের চিহ্ন আজো আছে বুকে।

আমার পূর্বপুরুষ ছিল পুষ্প প্রেমিক
তার সঙ্গিনী ভালবাসতো গুল্ম আর বিরুৎ
তাদের হাত ধরেই এসেছিল কৃষি সভ্যতা
আর দুর্বত্তরা তরবারী হাতে তাদের কলঙ্কিত করেছিল।

দুর্বত্তদের মুখ থেকে বের হয়েছিল শুয়রের দাঁত
দুর্বত্তদের উত্থিত লিঙ্গে ভালবাসা রূপ নিয়েছিল কদর্যতায়
দুর্বৃত্তরা সৃষ্টি করেছিল সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ
আমিও মুছে ফেলিনি হাজার বছরের নিপীড়নের দাগ।

আমি কৈবর্তের বংশধর
আমি শূদ্র বংশজাত
আমার পূর্বপুরুষ ছিল শ্রম দাস
আমরাই সভ্যতা বিনির্মাণ করেছি।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত