আবু সাঈদ দুই পা হারিয়েও একুশ বছর ধরে টানছেন সংসারের ঘানি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৪৫ | আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৬
বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের কুমিড়া পন্ডিতপুকুর এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আবু সাঈদ। গত ২৯ বছর ধরে বসবাস করতেন অন্যের ভাড়া বাড়িতে। জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য আবু সাঈদ বাস চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে বেশ চলছিলো আবু সাঈদের সাজানো সংসার। ২০০৩ সালে একদিন হঠাৎ আচমকা ঝড়ে ভেঙে যায় আবু সাঈদের সাজানো সংসার। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কমলপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়ে থেমে যায় আবু সাঈদের জীবন পথ।
আবু সাঈদের চিকিৎসার জন্য আবু সাঈদসহ তার পরিবারকে নামতে হয় ভিক্ষাবৃত্তিতে যেতে হয় অন্যের দ্বারে দ্বারে। আবু সাঈদের থাকার শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে এমনকি সাহায্যে সর্বমোট ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করেও সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেনি আবু সাঈদ। কাটা দুই পা নিয়েই অনেক কষ্টে ধার দেনা করে পরিবারে মুখে দু-বেলা দু-মুঠো খাবার তুলে দিতে আবারো জীবন যুদ্ধে নেমে পড়ে আবু সাঈদ। ৩ হাজার টাকা মাসে ছোট একটি খাবার হোটেল ভারায় নেয় আবু সাঈদ। সেই হোটেলে গিয়ে দেখা মেলে আবু সাঈদসহ তার পরিবারের দুঃখের চিত্র। তার স্ত্রী থালা বাসন পরিস্কার করছে আর ছেলে খাবার পরিবেশন করছেন। আবু সাঈদ কাটা দুই পা নিয়ে অন্য কাজ করছেন। সংবাদকর্মী আসার কথা শুনে ভেঙে পড়েন কান্নাই। এরপর কথা হয় আবু সাঈদের সাথে। খুলে বলেন তার জীবন কাহিনী। সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়েছে তবুও থেমে থাকেনি আবু সাঈদ ও তার পরিবার।
নিজের অসুস্থ জীবন এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে কোনোভাবে ৩ শতক জায়গা কিনে সেখানে টিনের ছাউনি করে জীবন যাপন করছে আবু সাঈদের পরিবার। তার অসহায় এই জীবনে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সরকারি আর কোনো আর্থিক সহায়তা মেলেনি। ছোট এই ভাড়া নেওয়া হোটেল দিয়েই চলছে আবু সাঈদের সংসার। সমাজের বিত্তবানদের নিকট ও সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান অসহায় আবু সাঈদের পরিবার।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত