টোল আদায়ের লুটপাটের টাকা হাট কর্তৃপক্ষের পকেটে

আদমদীঘিতে রেল স্টেশনে বহাল তবিয়তে চলছে কুরবানীর অবৈধ হাট

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৯:৩২ |  আপডেট  : ৪ জুন ২০২৫, ২০:১৯

বগুড়ার আদমদীঘিতে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই (২ জুন) সোমবারও বহাল তবিয়তে চলেছে নশরতপুর রেল ষ্টেশনের উপর অবৈধ কুরবানীর হাট। নশরতপুর কুরবানি হাটে গত শুক্রবার গরু প্রতি ৭শ থেকে ৮শ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। আর সোমবার হাটে গরু প্রতি ৫শ টাকা আদায় করেছে বলে জানা যায়। মজার ব্যাপার হলো ওই কুরবানির হাটটাই তো অবৈধ এই হাট থেকে সরকার কোন প্রকার রাজস্ব পায় না। ফলে টোল আদায়ের নামে লুটপাটের লাখ লাখ টাকা পুরোটায় ঢুকছে হাট কর্তৃপক্ষের পকেটে। 

এ বিষয়ে গত রোববার (১ জুন) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপজেলার কতিপয় গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে রেল ষ্টেশনের উপর ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ কুরবানির বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যা। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা একটু তৎপর থাকবেন নশরতপুর রেল ষ্টেশনের উপর যে কুরবানির হাট বসানো হয়েছে তা সরকারি ভাবে অনুমোদন নাই। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার নিষেধ করেছি। কিন্তু হাট কর্তৃপক্ষ শুনছে না। তারা যদি নিষেধ উপেক্ষা করে পুনরায় সোমবার ওই একই স্থানে হাট বসায় তাহলে আমরা সেনাবাহিনী সহ অভিযান চালাব। কিন্তু অভিযান তো দুরের কথা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোমবার হাটে প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি ওই অবৈধ কুরবানির হাটে। এদিকে বার বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন দিয়েও ফোনে পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের জনগণ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এমন দ্বিমুখী আচরণ আসলে রহস্যজনক। 

সোমবার সরজমিন হাটে গিয়ে জানা যায়, নশরতপুর রেল স্টেশনে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পূর্ব নির্ধারিত স্থানেই পুনরায় গতকাল সোমবার কুরবানীর হাট বসায়। এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে হাটের কোন অনুমতি নাই। তাহলে কোন খুঁটির জোড়ে হাট কর্তৃপক্ষ রেল ষ্টেশনের উপরে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে হাট চালাচ্ছে? এসব সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ও প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পশুর হাট থেকে লাখ লাখ মুনাফা লুফে নিচ্ছেন হাট কর্তৃপক্ষ। এদিকে আদমদীঘি, চাঁপাপুর সহ সান্তাহার রাঁধাকান্ত পশুর হাটেরও দেখা গেছে একই চিত্র।  

নশরতপুর হাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি লোকমান হোসেন বাবুর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমরা এবছর শুরু থেকেই এখানে হাট চালাচ্ছি। সরকারি অনুমোদন ছাড়া ও ঝুঁকি নিয়ে রেল ষ্টেশনের উপর হাট বসানো ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা অনুমতির জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। কিন্তু সেটি অনুমোদন হয়েছি কি হয়নি তা জানি না। এছাড়া অবৈধ টোল আদায় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীকে উগ্রমেজাজে বলেন আপনি কোন প্রেসক্লাবের সদস্য আপনার প্রেসক্লাবের সভাপতি/সেক্রেটারীর সাথে কথা হয়েছে তারা হাটে আসছিল, আপনি তাদের সাথে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন। 

বগুড়া সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (পথ) নারায়ন চন্দ্র বলেন, এ ব্যাপারে রেলওয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বগুড়া ডিসি মহোদয় ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে নশরতপুর রেল স্টেশনের উপরে পশুর হাট বসায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত