আদমদীঘিতে এক আদিবাসীর গাছের শেকর খুঁড়ে শামুক শিকার
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৭:১৮ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২৬
মাঠের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে সড়ক। সেই সড়কের গাছের শেকর এবং ধারের মাটির নীচে মাঝে মাঝে বড় সাইজের জীবিত শামুক লুকিয়ে আছে এমনটি নিশ্চিত হওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে কঠিন। কিন্তু শামুক শিকারী আদিবাসীরা অনেকটা চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারে। খাল-বিল ও পুকুর-জলাশয়ের নুড়ি শামুক নিধনের সাথে এবার যুক্ত হয়েছে মাঠের মধ্যে দিয়ে থাকা সড়কের বড় আকারের শামুক নিধন। এতে করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জানা গেছে, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের কয়েকটি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি বা আদিবাসী রয়েছে। এছাড়া উপজেলার অন্যান্য স্থানে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টি বা আদিবাসী নেই। এই উপজেলায় তাদের জীবনজীবীকার রশদ নুড়ি ও বড় শামুকের ভান্ডার রয়েছে। এই ভান্ডারে হানা দেয় পাশের নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলার আদিবাসীরা।
তারা আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও পুকুর-জলাশয়ের নুড়ি শামুক নিধন করে আসছেন দীর্ঘ দিন থেকে। এবার যোগ হয়েছে বর্ষা মৌসুমের আগ পর্যন্ত লুকিয়ে থাকা বড় শামুক নিধন কার্যক্রম। শামুক নিধন করে তাঁরা নিজেদের খাবার ও আয়-রোজগারের পথ সহজ করতে পেরেছে। কিন্তু পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির বিষয় সম্পর্কে তাঁরা উদাসিন। উপজেলার সান্দিড়া, দমদমা, কাশিপুর, ছাতনি-ঢেকড়া গ্রামের পাশ দিয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল। ওই বিলে ও বিলের দক্ষিন পাড়ের গ্রামগুলোতে যাতায়াতের জন্য সান্দিড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে ‘বোদলা খেয়া ঘাট’-পর্যন্ত বিশাল মাঠের মাঝখান দিয়ে রয়েছে সড়ক। সেই সড়কে দেখা মেলে তেলিপাহান (৪২) নামের এক আদিবাসীকে ওই সড়কের সারি সারি বিভিন্ন গাছের শেকরের ও সড়ক ধারের মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করতে।
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলা সদরের বাসিন্দা তেলিপাহানের সাথে আলাপে জানা গেল নুড়ি শামুক তাদের আয়-রোজগারের একটা মাধ্যম। কিন্তু এই মুহুর্তে তেমন দেখা মিলছে না। পক্ষান্তরে বড় শামুকের মাংস তাদের প্রিয় খাবার, বেশী দামে চলে বেচা-কেনা। গাছের শেকরের এবং সড়কের ধারের মাটি খুঁড়ে শামুক শিকার করার ফলে গাছ, সড়ক ও ফসলের মাঠের পরিবেশের কি পরিমান ক্ষতি হয় সেটা জানতে চাইলে, নীরব থাকেন তেলিপাহান। গাছের শিকড় থেকে শামুক তোলার এই দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করার সাথে সাথেই আদিবাসী তেলিপাহান বস্তা কাঁধে নিয়ে নিমিষেই স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত