অরাজনৈতিক ছদ্মবেশে হেফাজতের রাজনীতি
প্রকাশ: ৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:১০ | আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৮
অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে পরিচয়দানকারী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা তারা ধর্মীয় ইস্যুর বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক ইস্যুতে নাক গলাত শুরু করেছে। সম্প্রতি তারা যে ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সন্ত্রাসের তাণ্ডব সৃষ্টি করেছিল, তা কোনোমতেই ধর্মীয় ইস্যু ছিল না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমন প্রতিহত করার নামে তারা যে উচ্ছৃঙ্খলতা প্রদর্শন করেছে, তাকে আর যা-ই বলা যাক, কোনোমতেই একটি ধর্মীয় সংগঠনের কাজ বলা যাবে না। নরেন্দ্র মোদির আগমন প্রতিহত করার মধ্যে কোনো ধর্মীয় বিষয় জড়িত ছিল না। তাহলে ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম কেন তার আগমন ঠেকাতে অমন ধনুকভাঙা পণ করেছিল? এর প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই এই সংগঠনটির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে আরও প্রশ্ন ভিড় করবে।
নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এসেছিলেন একজন আমন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে। তিনি এমন একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী, যে দেশটি আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বড় সহায়তাকারীর। তারা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। আমাদের অস্ত্র দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তারা যে সহায়তা করেছিল তার উদাহরণ বিশ^ ইতিহাসে খুব কমই আছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস যে প্রবাসী সরকার আমাদের ছিল, সেটার দফতরও ছিল ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিম বঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। আমাদের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রও ছিল কলকাতায়। চরম বিপদের সময়ে ভারত আমাদের যে সহযোগিতা করেছে, তা যদি আমরা বিস্তৃত হই, তাহলে তা হবে চরম নিমকহারামী। এটা ঠিক, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বা দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান বা পদক্ষেপ কখনও কখনও বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ছিল। আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকার সেসব পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছে। কখনও কখনও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর নিষ্পত্তিও হয়েছে। তাহলে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঠেকাতে এমন মারমুখো কর্মসূচি কেন নেওয়া হলো তা ভেবে দেখা দরকার।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানায়নি। জানিয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। আজ মোদির স্থলে যদি অন্য কেউ ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, তাহলে তিনিই এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হতেন। সুতরাং ভারতে মোদি সরকার বা তার দল বিজেপি কী করেছে, মোদি তার দেশে সমাদৃত না নিন্দিত, এটা নিয়ে আমাদের দেশে এই উগ্র প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন কোনো বিচারেই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। হেফাজতে ইসলাম মোদিবিরোধী কর্মসূচি দিয়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক শিষ্টাচারকে অবমাননা করেছে নিঃসন্দেহে। তাদের এ উগ্রতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের ভাবমর্যাদা যে অনেকাংশেই ক্ষুণ্ন করে থাকবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অতিথিপরায়ণ দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের একটি সংগঠনের এহেন অতিথি অবমাননাকারী কর্মকাণ্ড শুধু দুঃখজনকই নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের সংবিধান সবাইকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। যেকোনো বিষয়ের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের স্বাধীনতাও নাগরিকদের রয়েছে। তবে সেসব প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। সহিংস প্রতিবাদ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়, আইনের দৃষ্টিতেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য। হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণই ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে তা সহিংস হয়ে উঠেছিল। তাদের এ বক্তব্য ঘটনার প্রেক্ষিতে ধোপে টেকে না। কেননা, সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী হাটহাজরী ও ব্রাহ্মবাড়িয়ার একটি থানা আক্রমণ এবং তা জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বিনা উসকানিতেই করেছে হেফাজত কর্মীরা। তা ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সঙ্গীত একাডেমিও হেফাজত কর্মীদের দ্বারা তছনছ হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে আগমনের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক কী?
বস্তুত এই ধর্মীয় সংগঠনটির কর্মকাণ্ডে সবসময় এক ধরনের উগ্রতা লক্ষ করা যায়। স্মরণযোগ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে তারা কতিপয় দাবি নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যে মহাসমাবেশ ডেকেছিল, তাকে কেন্দ্র করেও সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই ঘটনায় দেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইন্ধনও জুগিয়েছিল। সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতারা হেফাজতের মঞ্চে গিয়ে তাদের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। কেউ সমাবেশে আগতদের পানি পান করানোর ব্যবস্থা করে ‘অশেষ নেকি’ হাসিলের চেষ্টা করেছিলেন। আবার কেউ তার দলের নেতাকর্মীদের হেফাজতের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও তার আহ্বানে দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীই সেদিন হেফাজতের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়নি। তবে, ওই আহ্বান শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অ্যাকশনকে তরান্বিত করেছিল। শোনা যায়, হেফাজতের সঙ্গে সরকারের একটি সমঝোতা হয়েই গিয়েছিল। তদানুযায়ী সংগঠনটির তৎকালীন আমির আল্লামা আহমদ শফি রাত ১০টায় আখেরি মোনাজাত দিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি টানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই আহ্বান এবং হেফাজতের তৎকালীন মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরীর সেখানে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণার পরই দৃশ্যপট পাল্টে যায় এবং সরকারও সিদ্ধান্ত বদল করে। তারপর সেখানে যা ঘটেছে তা সবারই জানা। সে রাতে শাপলা চত্বরে কতজন আহত বা নিহত হয়েছিল তার পরিসংখ্যান আজ অবধি পাওয়া যায়নি। সরকার বলেছে কেউ মারা যায়নি, আর হেফাজতও সে বিষয়ে মুখ খোলেনি। ফলে ওই রাতে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে নানা গুজব বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে এসব ধর্মীয় সংগঠনের অপতৎপরতা বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। রাজধানীর দোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সরকারি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। তখনও দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা নানা ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছিল। এমনকি তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে বুড়িগঙ্গা নদীতে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিতেও পিছ পা হয়নি। এই তিনটি ঘটনায় হেফাজত তথা কতিপয় ধর্মীয় সংগঠনের ঔদ্ধত্যের উৎস কোথায় এ প্রশ্ন সচেতন ব্যক্তিদের মনে জেগেছে। তারা মনে করেন, এজন্য দেশের নেতৃত্বস্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দায় এড়াতে পারে না। এদের কোনো কোনোটি সরকারের পতন ঘটানোর কল্পনা থেকে হেফাজতকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। আর সরকার অনাবশ্যক নমনীয়তা প্রদর্শন করে এদের সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ মের ঘটনার পর আমরা সরকারকে হেফাজতের সঙ্গে আপোস করতে দেখেছি। তাদের দাবি দাওয়া মেনে নিয়ে চুক্তিও করা হয়েছে। তারপর ওদের ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনের বিষয়েও সরকারের নমনীয় মনোভাব লক্ষ করা গেছে। যদিও কয়েকটি মামলা হয়েছিল, তবে সেসব মামলার গতি কী হয়েছে তা দেশবাসীর অগোচরেই রয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে গত ১ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন এখানে উল্লেখ প্রয়োজন মনে করছি। ‘আট বছর পর সচল হচ্ছে হেফাজতের ৬০ মামলা’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঘটনার পর ২০১৩ সালে হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা পুরনো ৬০ মামলা সচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্যত এ মামলাগুলো এতদিন ‘ডিপ ফ্রিজে’ ছিল। হেফাজতের ব্যাপারে নীতিনির্ধারণী মহলের নমনীয়তার কারণে দীর্ঘদিন মামলাগুলোর তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি (সূত্র: সমকাল)। সুতরাং! এটা বলা নিশ্চয়ই অসঙ্গত হবে না যে, হিংস্র রূপে হেফাজতের এই বেড়ে ওঠার পেছনে সরকারের ভুল ভাবনাও কম দায়ী নয়।
রাজনৈতিক সংগঠন না হয়েও হেফাজত রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে। তাদের এহেন কর্মকাণ্ড সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আমির মরহুম আল্লামা আহমদ শফির ছেলে মাওলানা অনাস মাদানীর বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। সম্প্রতি একটি দৈনিকের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের সম্প্রতি আন্দোলন সম্পর্ক মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘হেফাজতের নামে যে আন্দোলন করা হয়েছে, সেটি ছিল লক্ষ্যহীন। ছাত্রদের ভুল বুঝিয়ে, রাস্তায় নামিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এতে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। নেতারা এর দায় এড়াতে পারেন না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। কিন্তু এখন যারা হেফাজতের দায়িত্বে আছেন, তারা সেই জায়গা থেকে সরে এসেছেন। তারা এখন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন (সমকাল, ২ এপ্রিল ২০২১)। উল্লেখ্য, বাবা আহমদ শফী যখন হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির ছিলেন, আনাস মাদানী তখন সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আহমদ শফী মৃত্যুর পর তাকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত ও হেফাজতে ইসলাম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এদিকে গত ২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে এক সমাবেশে হেফাজতের বর্তমান আমির মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী রাজনৈতিক নেতার মতোই বক্তব্য রেখেছেন। বাবুনগরী তার বক্তৃতায় ভারত সম্পর্কে যা বলেছেন, তা অত্যন্ত আপত্তিকর এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত। তিনি বলেছেন, ‘ভারতকে আমরা বন্ধুরাষ্ট্র মনে করেছিলাম। কিন্তু ভারত আমাদের চরম শত্রু’ (সময়ের আলো, ৩ এপ্রিল ২০২১)। প্রতিবেশী একটি দেশকে এভাবে প্রকাশ্যে শত্রু আখ্যায়িত করা কূটনৈতিক শিষ্টাচরের মধ্যে পড়ে কি না সে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। একটি দেশ বা রাষ্ট্রের সঙ্গে ভৌগোলিক কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে সমস্যা থাকলেও সে দেশকে শত্রু দেশ হিসেবে অভিহিত করা যায় না। এটা গর্হিত অন্যায়। ভারতের সঙ্গে আমাদের অনেক অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। এ দেশে ভারতবিরোধী মনোভাবাপন্ন লোকেরও অভাব নেই। তাই বলে দেশটিকে প্রকাশ্যে ‘শত্রুরাষ্ট্র’ বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে দেশটির সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। এখন সরকার এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয় সেটা দেখার বিষয়। সরকার যদি বাবুনগরীর এ মন্তব্যকে শুনেও না শোনার ভান করে, তাহলে জনমনে হেফাজত-সরকারের সম্পর্ক নিয়ে কথা উঠতে পারে।
এটা পরিষ্কার, হেফাজতে ইসলামের বর্তমান নেতৃত্ব কোনো একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন। দেশে ধর্মীয় সংগঠনের বিরোধিতা কেউ করবেন বলে মনে হয় না। তবে ধর্মীয় সংগঠনের ছদ্মবেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকে সমর্থন করা যায় না। একটি বিষয় এখানে উল্লেখ্য যে, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদের প্রধান কারণ হিসেবে হেফাজত নেতারা সে দেশে মুসলিম নির্যাতনের কথা বলেছেন। এরকম মুসলিম নির্যাতন বিশে^র অনেক দেশেই হচ্ছে। কিন্তু হেফাজত সেসব নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করে না। এমনকি প্রতিবেশী মিয়ানমারে নির্বিচারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের যখন নিধন এবং স্বদেশ থেকে বিতাড়িত করা হলো, সে সময় হেফাজতে ইসলামকে একটি হাঁচিও দিতে দেখা যায়নি। সুতরাং ভারতে মুসলিম নির্যাতনের ধোঁয়া তুলে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আমাদের দেশে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আগমনকে প্রতিহত করার নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যে গূঢ় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটা আর লুকিয়ে রাখার উপায় নেই। এটা ঠিক হেফাজত যদি রাজনীতি করতে চায় তাহলে তাদের বাধা দেওয়া যাবে না। কারণ ধর্মভিত্তিক অনেক রাজনৈতিক দলই আমাদের দেশে রয়েছে। আরেকটি না হয় বাড়বে। কিন্তু তাদের অরাজনৈতিক সংগঠনের মুখোশটি খুলে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিয়ে উদ্ধত ফণা অবনমিত করে দিতে হবে। অন্যথায় এরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারার চেষ্টা করবে। সৌজন্য-দৈনিক সময়ের আলো ।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত