অবশেষে বিদায় নিলেন আদমদীঘির এসিল্যান্ড
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১৭:৫৩ | আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৯
অবশেষে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার এসিল্যান্ডকে বদলি করা হয়েছে। গত ২৩মে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্লু স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় জনস্বার্থে জারীকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেনের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সর্বশেষ উপজেলার কেশরতা গ্রামে শিশুদের পিকনিক অনুষ্ঠানে রান্না করা খিচুরীতে আর্বজনা ও ছাগলের বিষ্টা ফেলে দিয়ে খাবার নষ্ট করে দেয়ার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক জনরোষের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বগুড়া জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গত বুধবার দুপুরে বগুড়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি উপজেলার কেশরতা গ্রামে সরেজমিন গিয়ে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেন। গত ১৯ মে রোববার রাতে উপজেলার কেশরতা গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে পিকনিকের খাবারে আর্বজনা ও ছাগলের বিষ্টা দিয়ে খাবার নষ্ট করেন উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। তিনি ওই গ্রামে গিয়ে পিকনিক অনুষ্ঠানে হাজির হন এবং সেখানে একটি ডিকচীতে খিচুড়ি রান্না করতে দেখেন। এ সময় তিনি সেখানে উপস্থিত লোকজনের কাছে জানতে চান এই খিচুরী রান্নার সাথে নির্বাচনের কোন সংস্লিষ্ট রয়েছে কিনা। সেখানে উপস্থিত থাকা ওই গ্রামের বাসিন্দা নিজাম উদ্দীন তাকে জানান, ছোট শিশুরা চাদা তুলে এই পিকনিক করছে, তিনি সহ কয়েকজন খাবার রান্নার কাজে সহয়তা করছেন। এই পিকনিকের সাথে নির্বাচনের কোন সংস্লিষ্টতা নেই। তাদের কথা বিশ্বাস না হওয়ায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) তার গাড়ি চালককে আশপাশ থেকে আর্বজনা নিয়ে এসে খাবারের ডেকচীতে ফেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। মুহুর্তেই গাড়ি চালক আর্বজনা, বালু ও ছাগলের বিষ্টা এনে খাবারের মাঝে ফেলে দিয়ে সমস্ত খাবার নষ্ট করে ফেলেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজকে জানান। এই ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেলে বগুড়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি গত রোববার দুপুরে কেশরতা গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের লিখিত স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি জানান, বিষয়টি দুঃখজনক, সহকারি কমিশনার (ভূমি) এই ঘটনায় অন্য ব্যবস্থা নিতে পারতেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেনের বক্তব্য নেয়া হবে এবং পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য গ্রহন করা হবে। তদন্তস্থলে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।এই তদন্তের মাত্র একদিন পর এসিল্যান্ডের বদলীর আদেশ জারি হয়। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত