অটোরিকশাচালকের হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৭ |  আপডেট  : ৫ মার্চ ২০২৫, ২৩:৪১

অটোরিকশাচালকদের মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুরের নতুন বাজার এলাকায় দ্রুতগতির তাকওয়া [মিনিবাস] পরিবহনের বাসে তুলে লিটন মিয়া [৩৫] নামে এক অটোরিকশাচালকের হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা।

মঙ্গলবার [৪ মার্চ] সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা তারা মহাসড়কের নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে সৃষ্টি হয়। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী, চালক ও সকালে কর্মস্থলে যাওয়া আশপাশের পোশাকশ্রমিকরা।

মহাসড়কে অটোরিকশা রেখে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন অটোরিকশাচালকরা। এ সময় অনেক যাত্রীকে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। পবিত্র রমজানের শুরুতেই সড়ক অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের লোকজন।

এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন গাজীপুর জজ আদালতের আইনজীবী ইসমাইল হোসেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তাকওয়া পরিবহনের বাসগুলো সড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। শুনেছি গতকাল রাতে এক অটোরিকশাচালককে তাকওয়া পরিবহন থেকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে।’

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা এলাকার এক পোশাক কারখানার কর্মকর্তা তাহাজ্জদ হোসেন বলেন, ‘এটা অন্যভাবেও সমাধান করতে পারতো শ্রমিকরা। বারবার দেখছি শ্রমিকদের সঙ্গে কিছু একটা হলেই তারা জনগণকে জিম্মি করে, সড়ক বন্ধ করে দেয়। এতে রোজার মধ্যে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এটা মগের মুল্লুক, কিছু হলেই সড়ক অবরোধ।’

ক্ষুব্ধ কয়েকজন যাত্রী বলেন, ‘ঘর থেকে বের হলেই মাথায় টেনশন থাকে সড়কের কোথায় যেন অবরোধ শুরু হয়ে গেলো। প্রতিদিনই কোনও না কোনও স্থানে কোনও ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটছে। যানবাহনে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে তো কোনও আন্দোলন হতে পারে না। এ ধরনের আন্দোলন তুলে নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রশাসনের কোনও তৎপরতা নেই। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা অটোরিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।’

হত্যার ঘটনার অভিযোগকারী প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সোমবার [৩ মার্চ] রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমি মহাসড়কের পাশেই নতুন বাজারে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস থেকে অটোরিকশাচালক লিটন মিয়াকে বাসেই হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে নতুন বাজার এলাকায় ফেলে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ চালক জনিকে আটকসহ তাকওয়া [মিনিবাস] পরিবহন জব্দ করে।’

অটোরিকশাচালক হাসমত আলী এবং দুলাল মিয়াসহ অন্যান্যরা অভিযোগ করেন, ‘অটোরিকশাচালক লিটন মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে বাসেই হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে।’

শ্রীপুর থানার ওসি [অপারেশন] নয়ন কর বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল অটোরিকশাচালককে হত্যার ঘটনায় মামলা করতে হবে। পরে তাদের হত্যা মামলার কাগজ দেখালে বেলা সাড়ে ১১টায় তারা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’

প্রসঙ্গত, অটোরিকশাচালক লিটন মিয়া নেত্রকোনার মদন উপজেলার শিবভাষা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে মেম্বারবাড়ী (শিরিরচালা) এলাকার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার স্ত্রী স্থানীয় বাঘের বাজার এলাকায় মন্ডল গার্মেন্টস পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গতকাল মহাসড়কের মাস্টারবাড়ী এলাকায় সড়কের পাশে লিটনের অটোরিকশা পার্কিং করা ছিল। তাকওয়া পরিবহন তার রিকশার লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলায় ওই পরিবহনের শ্রমিকদের সঙ্গে তার তর্ক হয়। পরে তাকে বাসে তুলে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ ওঠে।

 

সৌজন্যে : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত