অক্টোবরে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:০০ | আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩
ঢাকায় আসছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল। দলটি আগামী ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ আসবে এবং ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে।এ সময়ে ঢাকায় অংশীজনদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠক করবে তারা।
আইএমএফের প্রতিনিধি দলের এই সফরকে সৌজন্য সফর বলছেন অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কিন্তু এর মধ্যে তারা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। আইএমএফ প্রতিনিধি দল এমন সময়ে ঢাকায় আসছে, যখন দেশে ডলার সংকট বিদ্যমান। এছাড়া আন্তর্জাতিক এই অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানটির কাছে থেকে ঋণ নেওয়ার শর্তগুলো পালনে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান এবং ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের তাগিদ সামনে চলে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আইএমএফ প্রতিনিধি দলটির বৈঠকে আলোচনায় গুরুত্ব পাবে আর্থিক খাতের স্থায়িত্ব, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন, ব্যাংক খাতের সংস্কার, তারল্য ব্যবস্থাপনা, ডলারের বাজারভিত্তিক রেটে লেনদেন, ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি, সুদের হার ও মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন, টেকসই আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, বন্ড মার্কেট, ডলার পরিস্থিতির অগ্রগতি।
আইএফএম প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসার পূর্ব মূহুর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও স্টকমার্কেটের কাছ থেকে শর্ত ও পরামর্শ বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় আসার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে। পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আলোচনা সূচি নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ মিলিয়ন বা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। আইএমএফের জুড়ে দেওয়া শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাবে দেশ। আগামী অক্টোবরে আসা প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে কবে মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ। শর্ত পূরণ হলে ঋণে দ্বিতীয় কিস্তি ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার মিলবে চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। এ ক্ষেত্রে শর্ত পূরণ বিলম্ব হলে দ্বিতীয় কিস্তিও বিলম্ব হতে পারে।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এর মধ্যে এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণ সুবিধায় ঋণের তিন দশমিক তিন বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়্যান্স অ্যান্ড সানসেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় এক দশমিক চার বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার। এ ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলারে ছাড় করে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি।
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, মহামারী কোভিড-১৯ ও রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। এ বৈশ্বিক সংকটের ছায়া পড়ে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোয়ও। এ সময় বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়; সংকীর্ণ বা অপরিবর্তিত হতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রার উৎসগুলো। বাড়তে থাকে ডলারের দাম। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত বছরের জুলাই মাসে আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ চায় বাংলাদেশ। আবেদনে সাড়া দিয়ে আইএমএফ প্রতিনিধি দল কয়েক দফা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থনৈতিক সংস্কারের শর্ত এ ঋণ অনুমোদন দেয়। সেসব শর্ত পূরণে তদারকি করতে বাংলাদেশ সফর করবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত