সোনালী আঁশ কাটা জাক দেয়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত কাউনিয়ার চাষিরা

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৮:০৬ |  আপডেট  : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩১

কাউনিয়ায় সোনালী স্বপ্ন নিয়ে সোনালী আঁশ পাট কাটা, জাক দেয়া, ধোয়া এবং শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চলতি মৌসুমে পাটের ভাল দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। 

সরেজমিনে উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে চাষিরা বৃষ্টিতে ভিজে পাট কাটছেন, কেউবা পানিতে নেমে পাট ধোয়ার কাজ করছেন আবার কেউবা প্রচন্ড রোদে পুরে পাট শুকানোর কাজ করছেন। আশায় বুক বেঁধেছে কৃষক ক্ষতি পুশিয়ে লাভের মুখ দেখবে বলে। বিগত বছর গুলোতে সোনালী আঁশ কৃষকের গলায় ফাঁস হয়েছিল সেখান থেকে কৃষক প্রচন্ড খরা কে উপেক্ষা করে সেচ দিয়ে দাম ও বাম্পার ফলন পাওয়ার আশাকে জাগিয়ে রেখেছিল। দাম পাওয়ার আশায় সোনালী আঁশে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। পাট চাষী ও ব্যবসায়ী সুত্র জানায়, উপজেলার তকিপল বাজার, টেপামধুপুর হাট, মীরবাগ বাজার, খানসামা হাটসহ সব কয়টি হাটে পাট ক্রয় বিক্রয় শুরু হয় ভোর ৫ টায় আর বাজার শেষ হয়ে যায় সকাল ৯টার মধ্যেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে উপজেলার চর গনাই, পল্লীমারী চর, প্রাননাথ চর, ঢুষমারা চর, হয়বৎ খাঁ চর, চর সাব্দী, চর পাঞ্চরভাঙ্গাসহ ২৯টি চরাঞ্চলে পাটের চাষ হলেও উপজেলার অধিকাংশ মৌজায় পাটের চাষ কমেছে। তকিপল হাটে পাট বিক্রি করতে আসা প্রাননাথ চরের পাট চাষী অভিযোগ করে বলেন পাট চাষিদের খবর কেউ রাখে না। শুনেছি উপজেলায় একজন পাট কর্মকর্তা আছেন কিন্ত তার দেখা কখনই পাই না। পরিবেশ বান্ধব সোনালী আঁশ পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অবহেলায় সোনালী আশ পাট চাষ উপজেলায় দিন দিন কমে যাচ্ছে। পাট চাষি কালাম জানান পাট শুকানোর জায়গা না থাকায় তিস্তা ব্রীজের রেলিং এ পাট শুকাচ্ছি তবে এতে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগ জানায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৪৪৮ বেল। গত কয়েক বছর ধরে পাট চাষে আগ্রহী করতে সরকারী বা বেসরকারী কেউই কৃষকের সাথে কথা বলেন না তাই পাটে চাষ ছেড়ে দিয়েছে অনেকেই। পূর্ব চান্দঘাট গ্রামের পাট চাষী সিরাজুল জানান তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করি কিন্ত পানির অভাবে পাট জাগ দিতে ট্রলিতে করে অন্য জায়গা নিয়ে যেতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। পাট ব্যবসায়ী দুলু জানান চলতি মৌসুমে পাটের বাজার এখনও ভাল আছে। প্রতি মণ পাট প্রকার ভেদে ২৫শ থেকে ৩হাজার টাকা ক্রয় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর শুরুতে দাম ভালো থাকলেও পরে দাম কমে যাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকেরা। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানিয়া আকতার জানান চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলন হয়েছে আশা করছি ভাল দাম পাবে চাষিরা। পাট চাষে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রনদনা দিয়ে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত