বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনের নেতৃত্বে পদ্মা নদীতে নৌ র্যালি
মা ইলিশ সংরক্ষণে জনসচেতনতা

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:১৩ | আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৪

চলমান মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে জনসাধারণকে সচেতন করতে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপনের নেতৃত্বে নৌ র্যালি হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে আসাদুজ্জামান রিপন লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া বাজার থেকে বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে ট্রলারযোগে মা ইলিশ সংরক্ষণে মানুষকে সচেতন করতে পদ্মা নদীতে নৌ র্যালি বের করেন। র্যালিটি উপজেলার ঘোড়দৌড় বাজারে পদ্মাপাড়ে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে পদ্মাপাড়ে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয় আসাদুজ্জামান রিপন এতে বক্তব্য রাখেন। মুন্সীগঞ্জ-২ (লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি) আসনের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধনে আসাদুজ্জামান রিপন বক্তৃতায় বলেন, সারা বাংলাদেশে সরকারি উদ্যোগের বাইরে একটি রাজনৈতিক দল দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে একটি কর্মসূচি পালন করছে। লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ির মানুষ নিঃসন্দেহে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ, চলতি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত আমরা যদি মা ইলিশ না ধরি, মজুত না করি, বেচাবিক্রি না করি, পরিবহন না করি, এমনকি খাওয়াদাওয়া না করি, তাহলে প্রতিবছর যদি আমরা এমনটা করতে পারি, কিছু দুর্বৃত্তকে শায়েস্তা করতে পারি, যারা আইন প্রক্রিয়া সংস্থাকে আড়াল করে মাছ ধরছে- এটা যদি বন্ধ করা যায় তাহলে বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে ইলিশে স্বয়ংসম্পূর্ণ শুধু হবে না, বিদেশেও রপ্তানি করতে পারবে। একটা পদ্মা সেতুর মতো আরেকটা পদ্মা সেতু আমরা বানাতে পারবো। এই পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছের আয় দিয়ে আমরা মুন্সীগঞ্জের জন্য বড় উন্নয়ন করতে পারবো। আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, সরকার ৪ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি—এই নিষেধাজ্ঞা যেন সবাই মেনে চলে। যদি আমরা সত্যিই আমাদের দেশকে ভালোবাসি, তবে আমাদের মা ইলিশদের নিরাপদে ডিম পাড়তে দিতে হবে। একটি মা ইলিশ প্রায় ২২ লাখ ডিম ছাড়ে। এই কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরলে আগামী মার্চ মাসে পদ্মা নদী ইলিশে ভরে যাবে। আমরা যেমন গর্ভবতী নারীকে সম্মান করি, অত্যাচার-নির্যাতন করি না, জুলুম করি না; বরং কোনো গর্ভবতী নারী অসহায় অবস্থায় পড়ে, বিপদে পড়ে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াই। ঠিক তেমনি মা ইলিশ সমুদ্রের নোনা পানি থেকে মিঠা পানিতে অর্থাৎ পদ্মা নদীতে ডিম পাড়তে আসে, তখন যদি আমরা কয়েকটি দিন মা ইলিশকে রক্ষা করি তাহলে তারা ডিম পারবে। এই ডিম থেকে লক্ষ-কোটি ইলিশ উৎপাদন হবে। আমরা বিদেশে ইলিশ উৎপাদন করতে পারবো, সবার পাতে উঠবে ইলিশ। তিনি আরও বলেন, ইলিশ রক্ষা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। কিছু অসচেতন ও লোভী মানুষ নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরে দেশের ক্ষতি করছে। প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ, কোস্টগার্ড যদি আরও তৎপর হয়, তবে অবৈধভাবে ইলিশ ধরা অনেকাংশে বন্ধ হবে। আসাদুজ্জামান রিপন লৌহজং থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরে যেতে বিদ্যমান সরু রাস্তা বাংলাদেশের কোথাও নেই বলে জানান। চলতি বছরের প্রথম দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলনের ফলে সরকার মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটকে ৭৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের নদী বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, আমি একটি উদ্যোগ নিয়েছি মুন্সীগঞ্জে একটি আন্তর্জাতিক মানের মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বানাবো। সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, লন্ডন যাওয়ার দরকার পড়বে না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রোগী উঠাবে-নামাবে, বিদেশ থেকে রোগী আসবে সেই ব্যবস্থা করবো। আমরা ছোটখাটো স্বপ্ন দেখি না, অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে বলেন, আমার চারপাশে কোনো বাটপার থাকতে পারবে না, কোন দুর্বৃত্ত থাকতে পারবে না, চাঁদাবাজ থাকতে পারবে না। রাতে গোপনে গোপনে ইলিশ ধরবে, এমন লোক থাকতে পারবে না।
মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন নসু, উপজেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. কামাল খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক শাহ আলম রনি, টঙ্গীবাড়ি ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সরকারি লৌহজং কলেজ ছাত্রদল শাখার সাবেক সদস্য সচিব জহির আমিন দেওয়ান প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত