ভারত থেকে কী পেলেন, প্রশ্নের উত্তরে যা যা বললেন প্রধানমন্ত্রী
 অনলাইন ডেস্ক
  অনলাইন ডেস্ক
                                    
                                    প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:১৫ | আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২৩:৪৯
 
                                        
                                    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর ভারত সফরকালে সকল খাতে সনাক্ত সহযোগিতা এবং বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে গৃহীত সিদ্ধান্ত থেকে উভয় দেশের জনগণ লাভবান হবে।
ভারত সফর নিয়ে আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড মহামারির প্রেক্ষিতে দীর্ঘ তিন বছর বিরতির পর তাঁর সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন,সফরের পুরো সময় জুড়ে আমরা ভারতের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ও সৎ প্রতিবেশি হিসেবে সমতা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দু’দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার লক্ষ্য করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সকল দিকসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় যেমন, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের উপর আরোপিত এন্টি-ডাম্পিং ডিউটি প্রত্যাহার বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব মিলিয়ে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের একসঙ্গে নতুনভাবে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এই সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া অচিরেই একটি সমৃদ্ধশালী অঞ্চলে পরিণত হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সফরকালে ভারতের সংগে ৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হচ্ছে: সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের অধীনে কুশিয়ার নদী থেকে বাংলাদেশের ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক; বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ে ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (সিএসআইআর) সঙ্গে বাংলাদেশের সিএসআইআরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক;বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে ভারতের ভূপালে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ভারতের রেলওয়ের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে বাংলাদেশের রেলকর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দুই দেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক;বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ‘প্রসার ভারতীর’ সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সমঝোতা স্মারক; এবং মহাশূণ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ে বিটিসিএল এবং এনএসআইএল-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক।
তিনি বলেন, সমঝোতা স্মারক বিনিময় অনুষ্ঠানের পর আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তেইশটি ভারতীয় ভাষায় এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য পাঁচটি ভাষায় অনুদিত একটি বই উপহার দেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের সফরে গঙ্গার পর প্রথমবারের মত অভিন্ন নদী কুশিয়ারা থেকে সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় ১৫৩ কিউসেক পানি বণ্টনে আমরা একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। এই সমঝোতা স্মারকের ফলে রহিমপুর সংযোগ খালের মাধ্যমে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশ প্রযুক্তি, গ্রিন ইকোনমি, সুনীল অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক ও জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।
_1653984417.gif) 
শেখ হাসিনা বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে আমাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর আমি মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। একইদিন দিল্লির ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আমি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেই। অন্যদিকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এর আগে হায়দ্রাবাদ হাউজে পৌঁছলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে অভ্যর্থনা জানান। তাঁর সঙ্গে আমার একান্ত বৈঠক হয়।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত প্রত্যাবাসন বিষয়ে সহযোগিতা, ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটান হতে বিদ্যুৎ আমদানির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে ৭টি এমওইউ বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দেই। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মধ্যাহ্ণ ভোজে অংশ নেই।
কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধার কথা মাথায় রেখে ভারত হতে আমদানিকৃত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য যেমন, ধান, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি পণ্যের অনুমানযোগ্য সরবরাহের জন্য আমি ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছি।
ভারতের বিদ্যমান সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের অনুরোধগুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনাপূর্বক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ছাড়া, চলমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সম্ভাব্য জ্বালানি সঙ্কটের কথা বিবেচনায় রেখে আমি ভারত সরকারকে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের অনুরোধ জানালে তারা বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনা করবেন মর্মে আশ্বাস দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে স্থল শুল্ক স্টেশন/স্থলবন্দরগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিশেষ স্থল শুল্ক স্টেশনগুলোতে বিধিনিষেধ এবং অন্যান্য অশুল্ক বাঁধা অপসারণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে ভারত কর্তৃক প্রস্তাবিত দ্বিতীয় গেট নির্মাণের কাজ যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ হতে একটি প্রতিনিধি দল স্টার্ট আপ মেলায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে শীঘ্রই ভারত সফর করবে।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরও কিছু সমঝোতা স্মারক আলোচনাধীন রয়েছে যা শীঘ্রই সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করি। এসব সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর হলে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” অর্জনের পথে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।
প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে চলমান কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদেরদের অবহিত করে বলেন, মৈত্রী পাওয়ার প্লান্ট প্রজেক্টের ইউনিট-১ বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের অংশ হিসেবে রুপসা রেল সেতুর কাজ ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেললাইন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জ¦ালানি সহযোগিতার বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরে বলেন, ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাইপলাইন প্রকল্পের আওতায় ডিজেল আমদানির বিষয়ে সহযোগিতা,ভারতের শিলিগুড়িতে অবস্থিত নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেড হতে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর পর্যন্ত জ্বালানি তেল (ডিজেল) আমদানির লক্ষ্যে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডডশিপ পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প”-এর আওতায় ৯ এপ্রিল ২০১৮ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে “ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাইপলাইনের নির্মাণ প্রকল্প” - এর শুভ উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৩১.৫৭ কিলোমিটার (বাংলাদেশ অংশে ১২৬.৫৭ কিলোমিটার এবং ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার) পাইপলাইন ভারত সরকারেরর অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অংশের ১২৬.৫০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে ১২৫ কিলোমিটার পাইপালাইন স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। পাইপলাইন নির্মাণের ফলে জ্বালানি তেলের পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং সহজে, দ্রুততম সময়ে ও প্রতিকূল পরিবেশেও দেশের উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত হতে আমদানি করা যাবে; বর্তমানে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত হতে বার্ষিক ৬০-৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়। পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বার্ষিক প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন ভারত হতে ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হবে।পার্বতীপুরে বর্তমানে স্টোরেজ ক্যাপসিটি ১৫ হাজার মেট্রিক টন। চলমান প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৮ শ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্যাপসিটি বৃদ্ধি পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে আমি ভারতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রোপদী মুর্মূর সঙ্গে সাক্ষাত করি। সাক্ষাতকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি দু’দেশের সম্পর্ক আরও উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া, ভারতের নবনিযুক্ত উপরাষ্ট্রপতি জগদ্বীপ ধনখরের সঙ্গেও আমি সাক্ষাত করি।
এর আগে, ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী এস. জয়শঙ্কর আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতকালে তিনি কোভিড মহামারির প্রেক্ষিতে ভবিষ্যত সঙ্কট মোকাবেলায় দু’দেশের সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত বলে মত প্রকাশ করেন।
৭ সেপ্টেম্বর সকালে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, জনগণের মধ্যকার যোগাযোগ এবং কানেক্টিভিটির উপর গুরুত্বারোপ করেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ অবস্থা ও উন্নয়নের জন্য আমাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
ঐদিন সকালে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি বিজনেস ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকজন মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণও এই ইভেন্টে উপস্থিত ছিলেন। বিজনেস ইভেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের চিত্র ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরা হয় এবং তাঁদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
একই দিন বিকেলে আমি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনাসদস্য শহিদ হয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্টুডেন্ট স্কলারশিপ” বিতরণ করি। উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক/স্নাতকোত্তর - এ দুটি পর্যায়ে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতীয় সেনাসদস্যদের মহান আত্মত্যাগকে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়েছে। এতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি এবং বন্ধুরাষ্ট্র। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ভাষা ও সংস্কৃতির সাযুজ্যের কারণে আমাদের সম্পর্ক প্রগাঢ় হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালে সহায়তা ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সহযোগিতা এ বন্ধুত্বকে বিশেষত্ব প্রদান করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারত অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে, কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যার মাধ্যমে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা শূণ্যে নামিয়ে আনতে কাজ করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে। চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য রপ্তানি বন্ধের আগে বাংলাদেশকে আগাম বার্তা দিতে ভারত সরকার পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশের মুজিবনগর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ঐতিহাসিক “স্বাধীনতা সড়ক” চালু করা হবে।নদী দূষণ এবং অভিন্ন নদ-নদীর ক্ষেত্রে নদীর পরিবেশ এবং নদীর নাব্যতা উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে, সংবাদ মাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। এই প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফরে সহযোগিতার যে সকল ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত
 
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
             
    
            