ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:২৯ |  আপডেট  : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৫৮

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ।রোববার (২৮ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম এক বিবৃতিতে ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। তার মন্তব্য বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটায় না। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন যেকোনো ভুল, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনাকে বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, বিচ্ছিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর পদ্ধতিগত নির্যাতন হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চলছে। বিদ্বেষপূর্ণভাবে বাংলাদেশ-বিরোধী মনোভাব প্রচারের লক্ষ্যেই এমন পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

মুখপাত্র বলেন, “আমরা কিছু মহলের মধ্যে একটি একপাক্ষিক ও অন্যায্য পক্ষপাত লক্ষ্য করছি, যেখানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে বড় করে দেখানো ও ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হলো—বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন এবং ভারতে অবস্থিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাধারণ ভারতীয়দের উত্তেজিত করা এবং অপপ্রচার চালানো।”

মুখপাত্র আরও বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যাদের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তালিকাভুক্ত অপরাধী, যার মৃত্যু ছিল একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ওই ব্যক্তি তার একজন মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন, যাকে পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাই এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের চশমায় দেখা তথ্যগতভাবে ভুল এবং অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর।”

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন মহলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। কারণ, এ ধরনের অপপ্রচার সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের চেতনাকে ক্ষুণ্ণ করে।”

উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, গত বুধবার রাতে রাজবাড়ীতে স্থানীয়দের পিটুনিতে অমৃত মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত এবং তারা পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

এদিকে অমৃত মণ্ডলের ঘটনা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি প্রদান করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিবৃতিটি পোস্ট করেন। বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয় যে, এই ঘটনাটি কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। অমৃত মণ্ডলের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধমূলক মামলা ছিল। ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়টিও সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় গেলে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে এবং একপর্যায়ে তিনি প্রাণ হারান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত