পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার
প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৬ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৯
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে এর চেয়ে বড় অর্জন আর কিছু নেই। এ সেতু নিয়ে জাতি হিসেবে আমরা যেমন গর্বিত, তেমনি সারা বিশ্বেই এ সেতু নিয়ে ইতিবাচক ও প্রশংসামূলক আলোচনা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদ্মা সেতুর জন্য ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় তিনি বলেন, ‘এ সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। নানা চাপ, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার পর বাঙালি পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমরাও পারি। ভবিষ্যতে আমরা আরো উন্নত কাজ করতে পারব। গোটা বিশ্বে দেশের মর্যাদা উজ্জ্বল করেছে।’
ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক মন্তব্যে বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু শুধু একটি স্থাপনা নয়। এটি এখন বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশের গর্ব, আত্মমর্যাদা ও অহংকারের প্রতীক। এই সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব প্রতিটি বাঙালির, আপনার, আমার, আমাদের সবার।’
তিনি লিখেছেন বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে নান্দনিক পদ্মা সেতু। বহুমাত্রিক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও জটিল রকমের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আপনার, আমার, আমাদের নিজেদের অর্থেই নির্মিত হয়েছে এ সেতু। তিনি লিখেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো উন্নয়নশীল দেশের মানুষ যে নিজেদের উদ্যোগে এ রকম দৃষ্টিনন্দন ও টেকসই স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে, তা এক সময় ভাবতেও পারত না বিশ্ব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং বাঙালি জাতির অদম্য প্রচেষ্টায় তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশকে স্যালুট দিচ্ছে সবাই। পদ্মা সেতু এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার টাকায় আমার সেতু দেশের জন্য পদ্মা সেতু।’
আসলে এ সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর শেষে যেমন গোটা জাতি আগ্রহভরে অপেক্ষা করছিল, তেমনি কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের অন্তর্জ্বালাও আছে। গাত্রদাহ আছে। যারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন যাতে পদ্মা সেতু না হয়। কত ষড়যন্ত্র, কত চক্রান্ত। টাকা ছাড়ের আগেই টাকা চুরির কল্পকাহিনী। সে ইতিহাস ও ঘটনা কম-বেশি আজ আমরা সবাই জানি। টাকা চুরি হয়েছে, টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলিষ্ঠকণ্ঠে বলেছিলেন, যেখানে টাকাই দেয়া হয়নি, সেখানে চুরির প্রশ্ন আসে কী করে। তিনি বলেছিলেন, এটি ষড়যন্ত্র। পরে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর জন্য ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, চাই না বিশ্বব্যাংকের টাকা। নিজের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। তখন নোবেল বিজয়ী, পত্রিকার সম্পাদক, আইনজীবী, বিভিন্ন পেশার নামিদামি কিছু লোকজন বলেছিলেন, এটি অবাস্তব সিদ্ধান্ত। কোনো দিনই বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছাড়া পদ্মা সেতু হবে না। পদ্মা সেতু না হোক তাই তো তারা চেয়েছিলেন। সেজন্যই তো ষড়যন্ত্র করেছিলেন। যখন বিশ্বব্যাংক ঋণ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তারা যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন। পদ্মা সেতু হবে না। কেউ কেউ বলেছিলেন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন পর্যন্তই। সেতু হবে না। কেউ বলেছিলেন, জোড়াতালির সেতু, কেউ উঠবেন না।
যারা বলেছিলেন, পদ্মা সেতু হবে না, সম্ভব না। আজ পদ্মা সেতু বাস্তব। তারা কিন্তু একটিবারের জন্যও ভুল স্বীকার করেননি।
তবে তাদের অনেকেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান যাতে না হয়, বানচাল করা যায়, সে অপচেষ্টা করে ব্যার্থ। এ সেতুতে অন্তর্ঘাতমূলক কাজও করতে পারে। অসম্ভব কিছু না। তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চয়ই সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। জনগণকেও যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
আবুল কালাম আজাদ : বিএফইউজের সাবেক সভাপতি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত