'পদ্মাসেতুর একটি টাকাও কাছ থেকে ঋণ করিনি, এটা সমালোচনাকারীদের জানা উচিত’
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২, ১৪:৪৪ | আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০৮
পদ্মাসেতু এবং রেলসেতুর একটি টাকাও কারও কাছ থেকে ঋণ বা ধার করা হয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। এটা সমালোচনাকারীদের জানা উচিত। একেবারে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে আমরা তৈরি করছি। তারা অর্বাচীনের মতো মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে, এটা গ্রহণ করা যায় না।’
মঙ্গলবার (১৭ মে) সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে অনেক কথা। তারপর এলো পদ্মাসেতুর রেল লাইন, বলা হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে করার কি দরকার ছিল? কারা চড়বে…? আমি অপেক্ষা করছি, রেললাইন যখন চালু হবে তখন তারা (সমালোচনাকারীরা) চড়ে কিনা? এই মানুষগুলোকে আমার মনে হয় ধরে নিয়ে দেখানো দরকার হবে, রেল সেতুতে মানুষ চড়ে কিনা?’
পদ্মা একটি খরস্রোতা নদী জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদীর মধ্যে রয়েছে আমাজন এবং পদ্মা। সেই নদীর উপর রেললাইন দিচ্ছি। রেল লাইন নিয়েও তাদের সমালোচনা যে, এতো টাকা কেন খরচ করা হলো? কিন্তু এই একটা সেতু নির্মাণ হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের যে আমাদের জেলাগুলি-অঞ্চলগুলি আছে সেখানে যে অর্থনীতির গতিশীলতা আসবে, এই মানুষগুলোর চলাচল, পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে। সেটা তারা একবার ভেবে দেখেছে? এই রেলসেতু তো মোংলা পোর্ট পর্যন্তই সংযুক্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতে পায়রা পোর্ট যখন আমরা করবো, পায়রা পোর্ট পর্যন্ত যাতে সংযুক্ত হয়, সেই ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। কিন্তু সেটার এই মুহূর্তে খুব বেশি প্রয়োজন নেই বলে আমরা একটু ধীর গতিতে যাচ্ছি।’
‘এমনকি আমরা যখন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করলাম, তখনও তারা বলছে এটার কি দরকার ছিল? যাই করবেন তাতেই বলবে, এটার কি দরকার ছিল? তাদের জন্য দরকার না থাকতে পারে, কিন্তু আমার দেশের মানুষের জন্য দরকার আছে। তবে আমি মনে করি, আমাদের করা সব সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারও করবেন, আবার সমালোচনাও করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন। এটা বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জানে। আর বাংলাদেশে কতগুলি নাম আর চরিত্র আছে, এদের আমরা চিনি’, বলেন শেখ হাসিনা।
এজন্য দেশবাসীকে নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি-বেসরকারি সব খাতে সব বিষয়ে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ-পানি থেকে শুরু করে কোনো কিছুই অপচয় করা যাবে না বলে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এনইসি সভায় আরও একটা বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। সেটা হলো অপচয় রোধ করতে হবে। এটা ভয়ের কোনো ব্যাপার নয়। জনগণের অর্থ ব্যয়ে সাশ্রয়ী হতে হবে। পিএম কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, সরকারি বেসরকারি খাতে সাশ্রয়ী হতে হবে। পানি ও বিদ্যুতে সাশ্রয়ী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ভ্রমণের বিষয়ে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং সব বিষয়ে সাশ্রয়ী হতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অপচয় করা যাবে না। কোনো মতেই অপচয় করা যাবে না। এটা ভয়ের কোনো বার্তা নয়। কারণ সম্পদ সবারই সীমিত। অহেতুক সম্পদ অপচয় করার মানে নেই। শুধু অপচয় রোধ নয়, জনগণের জন্য দেশের জন্য প্রকল্প আগে নিতে হবে। ব্যয়ে ঘাটতি সবার থাকবে। কারো অফুরন্ত সম্পদ নেই। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আগে নিতে হবে। অহেতুক বাড়াবাড়ি করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত