ঢালিউডে বইতে শুরু করেছে সুবাতাস
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২১, ১০:২৪ | আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৫৪
নানা কারণে বাংলাদেশের সিনেমায় যাচ্ছিল দুর্দিন। মহামারির শুরুর দিকে সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তবে ইদানীং আশার আলো ফুটতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের সিনেমা অঙ্গনে বইতে শুরু করেছে সুবাতাস। প্রেক্ষাগৃহের স্বল্পতা মাথায় না রেখে এই করোনাকালেই সিনেমা নির্মাণ, মুক্তি, প্রচার ও পরিবেশনা বাড়ছে। প্রেক্ষাগৃহে নামকাওয়াস্তে ছবি মুক্তি দিচ্ছেন অনেক নির্মাতা। এমনকি প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য চলছে সিনেমার কাজ।
সম্প্রতি শুরু হয়েছে অন্তরাত্মা ছবির শুটিং, যেখানে অভিনয় করছেন শাকিব খান। প্রযোজক সেলিম খান একসঙ্গে ১০টি ছবির শুটিং শুরু করেছেন। এ ছাড়া মুক্তি, চোখ, ফিরে দেখা, নেত্রী দ্য লিডার, দামাল, যাও পাখি বলো তারে, গ্যাংস্টার ও লাইভ–এর মতো বেশ কিছু ছবির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। নির্মাণের ঘোষণা এসেছে লিডার: আমিই বাংলাদেশ, বায়োপিক, আর্তনাদ ছবির। এদিকে করোনায় আটকে থাকা বেশ কিছু ছবির শুটিং আবার শুরু হয়েছে।
করোনার শুরুতে নিয়মিত ছবি দেখা হতো না সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের। তবে এখন নিয়ম করে ছবি দেখতে হচ্ছে তাঁদের। সেন্সর বোর্ড সদস্য ম হামিদ জানান, অনেক দিন শুটিং ছিল না। কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা। দু–তিন মাস ধরে সেন্সর বোর্ডে নিয়মিত ছবি জমা পড়ছে। নীতিমালা মেনে নির্মিত ছবিগুলোকে সনদও দিচ্ছেন তাঁরা। গত দুই মাসে সেন্সর সনদ পেয়েছে পাপপুণ্য, চন্দ্রাবতী কথা, ডেঞ্জার জোন, স্ফুলিঙ্গসহ ১০টির মতো ছবি। ম হামিদ বলেন, ‘অনেকগুলো ছবি দেখেছি। বেশ কিছু ছবি দেখে মনে হলো, ছবিগুলো আবার দর্শককে হলমুখী করবে।’
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—এ দুই মাসে মাত্র তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। মার্চ মাসে মুক্তির তালিকায় যোগ হয় আরও ছবি। ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে দুটি ছবি। অপেক্ষায় আছে অলাতচক্র, গন্তব্য, স্ফুলিঙ্গ, প্রিয় কমলা, টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই। ছবি মুক্তির সংখ্যা বাড়ায় আশার আলো দেখছেন সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। যশোর মনিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম জানান, করোনায় অনেক দিন তাঁদের হল বন্ধ ছিল। এই সময় তাঁদের কিছু কর্মী বেঁচে থাকতে রিকশা, ইজিবাইক চালিয়েছেন। কেউ আবার গ্রামে গিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায় জড়িয়েছেন। সিনেমা হল খোলার পর তাঁরা আবার কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বসুন্দরী ছাড়া এখনো নতুন কোনো ছবি চালাইনি। নিয়মিত ছবি মুক্তি পেলে, হলে দর্শক বাড়বে। দর্শক হলমুখী হলে আমরা এই পেশার সঙ্গে জড়িত সবাইকে নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারব।’
বিদ্রোহী, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু, মিশন এক্সট্রিম, আগামীকাল, নীল মুকুট, বান্ধব, নীল ফড়িংসহ একাধিক ছবি গত বছর মুক্তির অপেক্ষায় ছিল। এগুলোর সঙ্গে এ বছর যুক্ত হবে বিক্ষোভ, পরান, অপারেশন সুন্দরবন, হাওয়া, নন্দিনী, রিকশা গার্ল, অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন, এই তুমি সেই তুমি, রক্তজবা, ৫৭০, গাঙচিল, কানামাছি, জ্যামসহ ৫০টির বেশি ছবি। পরিচালক মতিন রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ইদানীং ছবি নির্মাণ বেড়েছে। সিনেমা হলে ছবি মুক্তির সংখ্যা বাড়ছে, মুক্তির তালিকায় সেন্সর সনদ পাওয়া ও নির্মাণাধীন ছবির সংখ্যাও বাড়ছে। এগুলোর মধ্য দিয়ে এই অঙ্গন চাঙা হতে শুরু করেছে। চলমান সিনেমা সম্পৃক্ত কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি আবার উঠে দাঁড়াবে।’
ঢালিউড তারকা শাকিব খান মনে করেন এ সময়ে কিছু বড় বাজেটের কাজও করা দরকার। তিনি বলেন, ‘কিছু বড় বাজেটের ছবির কাজ হয়েছে, হচ্ছে। কলাকুশলীরা কর্মব্যস্ত হয়ে উঠছেন। চলচ্চিত্রের অবস্থা বদলাতে বড় বাজেটের ছবি নির্মাণ বাড়াতে হবে।’
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত