কাউনিয়ায় বিভিন্ন গ্রামে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে মাছের খামার

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮:২৮ | আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১১

কাউনিয়ায় বিভিন্ন গ্রামের দোলসহ রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের খালে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে, যা পরিবেশ ও স্থানীয় ধান চাষীদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে। পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষের ফলে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক জলাশয়ের স্বাভাবিক প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা ও অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মৎস্যজীবী ও ধান চাষীরা এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে জলাবন্ধতা সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকায়।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শতশত মাছের খামার গড়ে উঠেছে পানি প্রবাহ বন্ধ করে। মাছ চাষের ফলে স্থানীয় দোলা গুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষাকালে সমস্যা আরও বাড়ে, যখন নদীতে পানি যাওয়ার পথে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হয়। পানি বন্ধ হয়ে ফসলি জমি ও বাড়িঘরে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতার এই সমস্যা দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে। পানি বন্ধ করে মাছ চাষের ফলে উপজেলার বিভিন্ন দোলায় প্রায় তিন হাজার একর ফসলি জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে এবং ধান চাষিরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। থলের দোলা সহ বিভিন্ন দোলার চাষিরা স্বপ্ন বুনতেন আমন চাষে। বর্তমানে কৃষকের স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাছের খামার। অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মান ও পানি নিষ্কাশনের পথে বাধ দেয়ায় পানি প্রবাহিত না হওয়ায় বর্ষায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে নষ্ট হয় আমন ফসল। বিভিন্ন দোলার পানি থলের দোলা হয়ে আরকে রোড়ের খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিস্তা নদী গিয়ে পড়ে। সেই প্রবাহে পদে পদে বাঁধা। কৃষক শহিদার বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটাই দাবি পানি নিষ্কাশনের দ্রুত পদক্ষেপ। উপজেলায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আর-কে রোড়ের খাল দখল করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ হচ্ছে। ফলে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের ফলে ও ভারী বৃষ্টিতে পানি জমে বাড়িঘরে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বয় না করে মাছের খামার করে এবং সেতু, কালভার্টের মুখ বন্ধ করে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে দিয়েছেন, যা ফসলের ক্ষতি ও গ্রামগুলোকে প্লাবিত করার কারণ। এই ধরনের মাছ চাষের ফলে শুধু জলাবদ্ধতাই নয়, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, ফসল এবং পরিবেশেরও ক্ষতি হয়। কৃষক দুদু মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে তাদের বীজতলা নষ্ট হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আকতার বলেন, উপজেলায় ১১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। অপরিকল্পিত মাছের খামারের ফলে দোলা গুলোতে ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন, নিয়ম অনুসারে প্রবহমান কোনো জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। জলাশয়ে পানির প্রবাহ ও মাছের চলাচল বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করলে শাস্তির বিধান রয়েছে। যদি কেউ করেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত