প্লাস্টিকের দৌড়াত্ব্যে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈজষ পন্য

কাউনিয়ায় কুমারদের দুর্দিন, কেউ খবর রাখে না

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৫ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৪১ |  আপডেট  : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২:৩৯

কাউনিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভায়ারহাটের কুমার পাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা তাদের পূর্ব পূরুষের পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক পেশার মতো এ গ্রামের কুমাররাও এতোদিন টিকে ছিলেন নানা প্রতিকুলতার মধ্যে। কিন্তু প্লাষ্টিক পন্যার প্রভাব আর এঁেটল মাটি না পাওয়ায় ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, এনজিও গুলোর কড়া সুদে ঋণ এবং তাদের তৈরী পন্যার চাহিদা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তারা পেশা বদল করছেন।
 
সরেজমিনে উপজেলায় টেপামধুপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ভায়ারহাট কুমার পাড়ায় গিয়ে মৃৎশিল্পীদের সাথে কথা বলে যানাগেছে করোনার সময় আমরা যখন পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পরেছিলাম তখন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উলফৎ আরা বেগম নিজে এসে আমাদের ২০টি পরিবারকে খদ্যসহায়তা প্রদান করেছিলেন এরপর আজ পর্যন্ত আর কেউ তাদের কেই খবর রাখে নি। আর্থিক সংকটে অনেকে পূর্ব পূরুষের পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা টেপামধুপুর ইউনিয়নে কুমার পাড়া গ্রামটির শোভা বর্ধন করে পালদের নিপুন হাতে মাটির কলস, চাড়ি, হাঁড়ি, পাতিল, খুঁটিসহ মাটির তৈরী নানা বৈচিত্রের খেলনা সামগ্রী। তাদের তৈরী বাসনপত্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে ঠেলাগাড়ী, ভ্যান ও ভারে করে। যান্ত্রিক সভ্যতা যুগে মাটির তৈরী সামগ্রীর পরিবর্তে প্লাস্টিক সামগ্রীর সহজলভ্য দাম কম হওয়ায় তাদের তৈরী জিনিসের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। টেপামধুপুর কুমার পাড়া গ্রামে ১৫-২০টি পাল পরিবার রয়েছে। কুমার পাড়া গ্রামে মেনেকা বালা পাল (৬০) জানান, আগের মতো তাদের জিনিসের আর কদর নেই। করোনার সময় অনেকেই এই পেশা ছেরে দিতে বাধ্য হয়ে ছেন। অনেক কষ্টে এ গ্রামের কুমাররাও এতোদিন টিকে থাকলেও নানা প্রতিকুলতার বেচা কেনা না থাকায় তাদের বেহাল অবস্থা। তার উপর প্লাষ্টিক পন্যার প্রভাব আর এঁেটল মাটি না পাওয়ায়, পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, এনজিও গুলোর কড়া সুদে ঋণ, তৈরী পন্যার চাহিদা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তারা এ পেশা ছারতে বাদ্ধ হচ্ছে। বিপেন পাল বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে ধরে রাখার জন্য পুঁজি আমাদের নেই, উপজেলা প্রশাসন বা কোন এনজিও আমাদের খবর রাখে না। বাধ্য হয়ে পেশা ছেড়ে দিতে হবে। অবিনাষ পাল ও লালু পাল বলেন, সরকার আমাদের ঋণ সহায়তা দিবে বলে কিন্তু তা পাই না। ব্যাংকে ঋনের জন্য গেলেই বলে জমির কাগজ লাগবে, আমরা জমি পাব কোথায় ? অনেকেরই সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে এনজিও থেকে কড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। কাউনিয়ার ঐতিহ্যবাহী ভায়ারহাটের কুমার পাড়ায় পাল সম্প্রদায়ের মধ্যে মধুর সম্পর্ক লক্ষনীয়। তারা জানান প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্মত মাটির তৈরী পন্য ব্যবহার কমে যাওয়ায় বাড়ছে ক্যানসার সহ নানা ধরনের মরন ব্যাধি। সরকার আমাদের উৎপাদিত পন্যর আধুকায়ন করারা ক্ষেত্রে ঋণ সহায়তাসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করলে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা পাবে, অন্যদিকে এ পেশায় কর্মসংস্থান বারবে। করোনা কালে এশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার সহ জনপ্রতিনিধিদের নজরদারী প্রয়োজন।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত