বৈষম্যের আর সুযোগ নেই, তরুণ নেতৃত্বে হতে হবে দেশের শাসন
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৬ | আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:১০
এই ৫২ বছর বয়সে দেখেছি শহিদ জিয়ার শাসন, এরশাদ শাসন ও করেছি এরশাদ বিরোধী আন্দোলন । দেখলাম খালেদা জিয়ার শাসন, এরপর পনেরো বছরের হাসিনার সরকার। জিয়ার, এরশাদ আর খালেদা জিয়ার শাসনের হতে মুক্ত হতে হাসিনার সরকারকে জনগোষ্ঠী সমর্থন করলো। কি হলো? উন্নয়ন হলো, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তথ্য বিশ্লেষণ হলো, লেখক সাহিত্যিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে পারলো। কিন্তু কি হারালাম? কি পেলাম? ভোট দেয়ার অধিকার হারালাম, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন যারা আজ আক্রোশের শিকার , আমি হারালাম আমার জমি, আমার নির্বচনী এলাকার ভূমি মন্ত্রী হওয়ার পরেও তাঁর লোকজন আমার জমি ক্রয়ের নামে টাকা না দিয়ে দখল করলো কারণ আমি বৌদ্ধ, রামুর বৌদ্ধ বিহার পোড়ানোর বিচার হলো না, শরংকর ভান্তের মতন অনেক বৌদ্ধ ভিক্ষু হাসান মাহমুদের কারণে হলো দেশ ত্যাগ, হাসিনাকে মা ডাকা হলো উত্থান- পেলো একুশে পদক , বাংলা একাডেমি দলীকরণ হলো, একুশে আর স্বাধীনতার পদক পেলো তাঁরা, যারা ব্যক্তি গুণগান করতো, ব্যাংক লুটপাট, এস আলম বেক্সিমকো গাজি ইত্যাদির জন্ম হলো, নোবেল বিজয়ী হলো আদালতের বিচারে দোষী, আজ তিনিই রাষ্ট্র নায়ক, কথা বলা বারণ ছিলো, প্রবন্ধ লিখলে সরকারের সমালোচনা থাকলে প্রকাশিত হতো না বা প্রকাশিত হলে প্রকাশক বই আকারে ছাপাতে রাজি ছিলো না, দুর্নীতিবাজদের রাজত্ব কায়েম হলো।
কিন্তু দুঃখজনক হলো, অন্তরে রক্তক্ষরণ হলো যখন হাসিনার সিস্টেমের কাছে আমার দুই প্রতিনিধি শপথ নিলো। সেই রাষ্ট্র প্রধানকে মানতে পারিনা, কারণ যখন আমাদের সন্তানদের বুকে গুলি চলেছে তখন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি নীরব ছিলেন। উনি রাষ্ট্রের অভিভাবকের দ্বায়িত্ব পালন করেননি। শপথ হওয়া উচিত ছিলো উন্মুক্ত ময়দানে। যেখানে তাঁরা আমার সন্তানদের হত্যা করেছে। এটি ছাত্র জনতা মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু, পার্বত্য, আদিবাসী সকলের যুদ্ধ। অত্যাচার, লুটপাট, ভোট না দিতে পারা, পেয়াঁজ আলুর চাল বৃদ্ধি করে আমাদের ক্ষুধা নিয়ে তামাশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। তাহলে সংবিধানের দোহায় দিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদেরকে বাধ্য করা হয়েছে ঐ সিস্টেমের কাছে মাথা নত করাতে। আমরা মর্মমাহত। গত বছরগুলোতে বারবার এই হাসিনা সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখে গেছি, আর আজ বিজয়ের পর তাঁরই রেখে যাওয়া দুর্নীতি আর ব্যাংক লুটপাটের দোসরদের কাছে শপথ নিতে হচ্ছে। আফসোস।
এখন কি চাই? স্যার ডঃ ইউনুসের বিরুদ্ধে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলাম। বলেছিলাম এটা ঠিক হচ্ছে না। প্রবন্ধে লিখেছি, উনার ওয়েব সাইটে গত কয়েক বছর লিখেছি, স্যার আপনাকে দরকার। উনি আজ ক্ষমতাসীন। আমরা আর বিগত সরকার গুলোর মতন সরকার চাই না। আমরা আমাদের রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে আর বিসর্জন দিতে চাই না, আমাদের নির্বাচনের বিষয় পাশের রাষ্ট্রের দোয়া আশীর্বাদ চাই না, কোন রাষ্ট্রের খবরদারি চাই না। আমরা চাই বাঙ্গালী চেতনা নিয়ে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে। একটি বৌদ্ধ স্থাপত্য প্রদর্শনী করতে চেয়েছিলাম পাকিস্তানের কুষাণ যুগের, কোন বৌদ্ধ নেতা বিহার রাজি হয় নি, কারণ হাসিনার প্রশাসন ধরে নিয়ে যাবে। মেধা শিক্ষা সংস্কৃতি সাহিত্য হয়ে গিয়েছিল দলীকরণ।
তাই আজ চাই: ১] একটি দুর্নীতিবাজ মুক্ত বাংলাদেশ, ২] প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ ও দলীকরণ মুক্ত কর্মকর্তা, ৩] ভোট দেয়ার অধিকার, ৪] বাক স্বাধীনতা, ৫] সংস্কৃতি, সাহিত্য চর্চার অধিকার, ৬] সত্য কথা বলার ও লিখার অধিকার, ৭] রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে করা সকল চুক্তি বাতিল, ৮] শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির চর্চা করার অধিকার ও তাকে কোন ধর্ম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এসব তকমা মুক্ত রাখা, ৯] সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নিষেধ , ১০] সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতির নিষেধ, ১১] বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণামূলক কাজের ফান্ড বৃদ্ধি, ১৩] পত্রিকা ও মিডিয়ার মত প্রকাশের স্বাধীনতা। দলীকরণ মুক্ত।, ১৪] ভূমি অফিস দুর্নীতিবাজ মুক্ত করণ, ১৫] সচিবালয় দুর্নীতিবাজ মুক্ত করণ, ১৬] একটি দক্ষ যোগ্য কমিশন গঠন করে বিশ্ব মানের শিক্ষা নীতি প্রণয়ন, ১৭] প্রতিটি বিভাগে একটি করে মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত করা। যাতে চিকিৎসার জন্য পাশের দেশে গিয়ে হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় বন্ধ হয়।, ১৮] একটি দক্ষ যোগ্য কমিশন গঠন করে বিশ্ব মানের স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন , ১৯] দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির লাগাম টানা, ২০] অসাধু ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার সুযোগ বন্ধ করা, ২১] বিগত সকল সরকারের সময়ের মন্ত্রী, আমলা, প্রশাসন ও সরকারের কর্মচারী, ব্যবসায়ীদের, রাজনীতিবিদদের পাচার করা সকল অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা। তাদের বাংলাদেশের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, ২২] দৃষ্টান্ত হিসেবে দুর্নীতিবাজ কয়েকজনের তাঁদের পরিবারের এবং তাঁদের সাথে সম্পৃক্ত সকলের জাতীয় আইডি কার্ড, পাসপোর্ট ও সকল নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়া, যাতে তাঁরা তাঁদের সন্তান পরিবার সম্পৃক্তরা এই দেশের কোন সুযোগ সুবিধা না পায়। এটি হবে দুর্নীতিবাজ ও রাষ্ট্রের বিরোধীদের জন্য মেসেজ, ২৩] সকল প্রশাসন, সচিব, রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, সাব রেজিস্টার, বিচার বিভাগ যেখানে দুর্নীতিবাজ আছে তাঁদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, ২৪] পুলিশ প্রশাসনের সকল কালো আইন ক্ষমতা বাদ দিতে হবে, ২৫] প্রশাসনকে করতে হবে দলীয়করণ মুক্ত, ২৬] সকল সরকারের সময়ের সকল হত্যার বিচার, ২৭] বৌদ্ধ, খৃষ্টান, পার্বত্য জনগোষ্ঠীর ও হিন্দুদের সমঅধিকার নিরাপত্তার বিধান করতে হবে। তাদের সংখ্যালঘু বলা যাবে না, ২৮] রাষ্ট্রের সকল পদে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিক নিয়োগ, ২৯] ঘুষখোর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হোক, ৩০] সরকারের সকল প্রকল্পে অতিরিক্ত বাজেট দেখিয়ে লুটপাট, ঘুষ বন্ধ হোক। তার কঠোর শাস্তির বিধান করা হোক, ৩১] বাংলাদেশে ভারত শ্রীলঙ্কান সকল কর্মকর্তাদের সংখ্যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে কমিয়ে বাংলাদেশের মেধাবীদের সুযোগ করে দিতে হবে, ৩৩] সকল প্রজেক্টের কাজ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দিতে হবে, সকল সার্ভে, কনস্ট্রাকশন, ইমর্পোট, ড্রেজিং সকল কাজ। বিদেশী কনসালটেন্ট নিয়োগের নামে আমাদের প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আর আমাদের আয়কৃত রেমিটেন্স নষ্ট করা যাবে না, ৩৪] বাংলাদেশে সকল ভারতীয়দের ব্যবসা কমিয়ে আনতে হবে, ৩৫] ভোজ্য ও ভোগ্য পণ্যের উপর অধিক মুনাফার লোভে ভারতের পণ্য দাম বৃদ্ধির মাধ্যমেই বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈষম্য দূর করতে হবে, ৩৬] ভারত থেকে অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বা অতিরিক্ত পণ্যের আমদানি বন্ধ করতে হবে, ৩৭] ভারত ও চীনের সাথে বাণিজ্য বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে, ৩৮] ভারত ও চীনের সাথে হওয়া সকল চুক্তি প্রকাশ করতে হবে, ৩৯] কুইক রেন্টালের জন্য করা কালো আইন বাতিল করতে হবে, ৪০] তেল গ্যাস আমাদের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না, ৪১] বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে অন্য রাষ্ট্রের যানবাহন চলতে দেয়া যাবে না, ৪২] মংলা বা চট্টগ্রাম বা অন্য বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া যাবে না, ৪৩] বুড়োদের যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশী, তাঁদের বেশীরভাগকে রাষ্ট্রের কোন পদে দেখতে চাইনা। বিগত বছর গুলোর সরকারে থেকে তাঁরা আমাদের তাঁদের বেশীরভাগ চোরের মুখোশ দেখিয়েছে। আমাদের আগের প্রজন্ম আমাদের চোখে চোর দুর্নীতিবাজ, ৪৪] আমাদের ভুখন্ড কোন রাষ্ট্রকে ব্যবহার বা ঘাটি করতে দেয়া যাবে না। ৪৫] আমাদে বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশী বা পাশের কোর রাষ্ট্রের খবরদারী মাতামাতি মানবো না।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত