দেবপ্রিয় বড়ুয়া
ভীষণ বিচলিত হয়ে পড়ছি। নিজ মৃত্যু ভয়ে নয়। কোথায় চলেছে স্বদেশ ? আপনারা কেউ অনুমান করতে পারছেন ? না অনুমান করতে পারছেন না। সরকার শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু ইতরবিশেষ কোন পরিবর্তন নেই। দিনদিন সংক্রমণ ও সমহারে মৃত্যু বাড়ছে। এরিমধ্যে ধনী থেকে নির্ধন, জাতীয় পর্যায় থেকে সাধারণ, আত্বীয়-অনাত্বীয় নির্বিশেষে অনেককে হারিয়ে ফেলেছি। ঢাকা-নারায়ণগন্জের পর চট্টগ্রাম এখন মৃত্যুপুরী। ঘরে ঘরে মরছে, কোন হাসপাতালে ভর্তি করছেনা, করোনা পরীক্ষা ছাড়া। পরীক্ষা করার জন্য সুপারিশ ছাড়া কিছুই করা যাচ্ছে না। যার ঘরে একটু হাঁচি-কাশি-জ্বর হয়েছে বললে চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়াও দূস্কর। সাধারণ লোক কোথায় যাবে বলুনতো ?
এরিমধ্যে ঈদের বন্ধে নির্বিছারে মানুষ এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় গেছে। কোন সোশ্যাল ডিস্টেন্স মানেনি। গত সপ্তাহে বলেছিলাম দেশকে হার্ড ইমিউনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ? এ’জনবহুল গরীব দেশের গরীব জনগনকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ? কেন লকড-ডাউন কঠিন ও কঠোর করা হচ্ছেনা ? তার জবাব কে দেবে ? আমাদের সীমিত সম্পদ ও সুযোগ। কাকে দোষারোপ করবো ? এ’যেন আমার পাপ, তোমার পাপ ! সামনের সপ্তাহসমুহ ও জুন মাসে দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। আমরা খোলা চোখে দেখতে পাচ্ছি। আমার বাসার গলিতে এক বৃদ্ধ মারা গেছে গত সপ্তাহে সেটা জানতেও পারিনি। গত পরশুদিন রাত ১০.৩০ টায় সে বিল্ডিং থেকে আর এক ছেলেকে করোনা আক্রান্ত নিয়ে গিয়ে লকড-ডাউন ঘোষণা করেছে। এ’পরিস্হিতি সর্বত্র। অথচ এখন মসজিদ খুলে দিয়েছে ! আজকের টিভি রিপোর্ট বলছে কোন জামাতে প্রকৃত-প্রস্তাবে সোশ্যাল ডিস্টেন্স মানা হয়নি দুয়েকটি জাতীয় মসজিদ ছাড়া। কোলাকুলি ও করেছে। তাহলে বুঝুন পরিস্থিতি কোথায় যাচ্ছে ? করোনা সকলকে সমান করে দিয়েছে। মৃত্যু যেমন সবাইকে সমান করে দেয়। গতকাল আমি আর একটা স্টাটাসে ধনীলোকদের উদার আহবান জানিয়েছিলাম আপনারা সকলে এক হউন। হাজার হাজার কোটি টাকা আপনারা নিজস্ব ব্যাংকে জমিয়ে রেখে শীলার নীছে পড়ে রয়েছেন। কিন্তু মৃত্যু এড়াতে পারেননি। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে মাফ চেয়ে সারেন্ডার করুন। পার্শবর্তী ভারতের টাটা-বিরলার মতো দেশের স্বাস্থ্যখাতে অতিসত্বর অবকাঠামো নির্মাণ করুন। নিজে বাঁচুন, গরীব জনগনকে বাঁচান। প্রায়শ্চিত্ত করুন।
প্রকৃতি যখন রুস্ট হয় কড়ায়-গন্ডায় প্রতিশোধ নেবে। নিজেকে প্রশ্ন করুন কি কি অন্যায় ও অবৈধ কাজ করে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। হিসেব রাখার সময় ও সুযোগ কোনটাই তো পাচ্ছেন না। তিন প্রজন্ম একসাথে একঘরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। এখন তওবা করার সময়। কারো হাতে সময় বেশী নেই। এটাই জীবন-সত্য। যাপিত জীবনের নির্মম অভিজ্ঞতা শেয়ার করে গেলাম জীবন-মরণের সীমানায় দাড়িয়ে। চলুন নিজে বাঁচি দেশের সাধারণ জনগণকে বাঁচাই।