স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে এখনও বিচ্ছিন্নভাবে লোকজন ছুটছে দক্ষিণ বঙ্গের উদ্দেশে। ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহন ও মোটরসাইকেলে এরা আসছে শিমুলিয়া ঘাটে। কিন্ত ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটের অদূরেই আটকিয়ে দেয়া হচ্ছে এসব লোকজনকে। আর আটকে পরা এ সকল লোকজন ট্রলারে করে পার করতে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। জনপ্রতি ৩-৫শ’ টাকার বিনিময়ে লৌহজং ও শ্রীনগরের কয়েকটি স্পট থেকে যাত্রীরা এখন পদ্মা নদী পার হচ্ছে এসব ট্রলারে করে। নৌপুলিশ অভিযান চালালেও এই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে পেরে উঠছে না।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে গেল সোমবার দুপুর থেকেই ফেরি চলাচল বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। আর ঘাটের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। কেউ যাতে এ নৌপথে পারাপার হতে না পারে, সে জন্য পুলিশের সদস্যরা মহাসড়কসহ ঘাটের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করছে। শুধু মাত্র পণ্যবাহী যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহনকেই ঘাটে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এ নৌপথে ফেরিগুলো বিভিন্ন ভাসমান ডকইয়ার্ডে ও মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ফলে ঘাটে নেই কে নো ফেরি, তবে ঘাটে অপেক্ষমাণ রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অ্যাম্বুলেন্স। এদিকে ঘাটে লঞ্চ, সিবোট ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ও ঢাকা থেকে বিভিন্ন উপায়ে আসা যাত্রীরা শ্রীনগরের কবুতরখোলা, লৌহজংয়ের কান্দিপাড়া, যশলদিয়া, শিমুলিয়া বাজার ও বাজার বরাবর চর, লৌহজং বরাবর পদ্মার চর, মাওয়া পুরাতন ফেরী ঘাট ও মাওয়া মৎস্য আড়ত সংলগ্ন নদী তীরবর্তী এলাকা দিয়ে স্থানীয় এক শ্রেনীর অসাধু লোকজনের পরিচালিত ট্রলারে করে ঝুঁকি পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে। শুধু ট্রলারই নয়, বালু টানা বাল্কহেড ও মাছ ধরার ট্রলারেও পার হচ্ছে মানুষ। সরেজমিনে নদী তীরবর্তী এলাকা যশলদিয়া গিয়ে দেখা যায়, এখানে কয়েক ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ট্রলারে ও বালু টানার বাল্কহেডে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়ে যাত্রীদের পদ্মা নদী পারাপারে সুযোগ করে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে লৌহজং থানার ওসি আলমঙ্গীর হোসাইনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমি পুলিশ পাঠাচ্ছি সেখানে। মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১৩টি ট্রলার আটক করে পদ্মায় ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত আরও ১৭টি ট্রলার ডুবানো হয়েছে। আমরা চেষ্টা করে চলেছি। তবে নানান দিক থেকে লোকজন ট্রলারে পার হচ্ছে। তাই একদিকে রেখে আরেক দিক গেলেই এদিকে আবারো শুরু হয় ট্রলার চলাচল। আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। ট্রলার পেলেই যাত্রী নামিয়ে পদ্মায় ডুবিয়ে দিচ্ছি।